মঙ্গলবার ● ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২২
প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী » বিশ্বনাথ পৌর নির্বাচন বর্জনের আহ্বান বিএনপি নেতার
বিশ্বনাথ পৌর নির্বাচন বর্জনের আহ্বান বিএনপি নেতার
বিশ্বনাথ প্রতিনিধি :: আগামী ২ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হচ্ছে সিলেটের বিশ্বনাথ পৌরসভার প্রথম নির্বাচন। এই নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অংশগ্রহন করছে না বিএনপি। তবে মেয়র এবং কাউন্সিলর পদে বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের অনেক নেতাকর্মী নির্বাচনে প্রার্থী হতে প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
তাই দলীয় নেতাকর্মীদেরকে নির্বাচন বর্জন করার আহ্বান জানিয়েছেন উপজেলা বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট মোঃ খালেদ হোসেন। তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পৌর নির্বাচন বর্জনের আহ্বান জানিয়ে একটি স্ট্যাটাস দেন।
পাঠকের জন্য ওই স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো :
‘আসসালামু আলাইকুম। সম্মানিত বিশ্বনাথ উপজেলা ও পৌর বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, কৃষকদল, ছাত্রদল এবং অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ আপনারা নিশ্চয়ই অবগত আছেন নির্বাচন কমিশন বিশ্বনাথ পৌরসভা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছেন এবং ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কল্যাণে জানতে পারি আমাদের দলের অনেকেই নির্বাচনে মেয়র ও কাউন্সিলর পদে প্রার্থীতা ঘোষণা করেছেন।
আপনারা নিশ্চয়ই জানেন বাংলাদেশে জাতীয়তাবাদী দল দীর্ঘ এক যুগেরও বেশি সময় ধরে মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম চালিয়ে আসছে এবং ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে আমাদের প্রিয় নেতা এম ইলিয়াস আলী তাহার গাড়ি চালক আনছার আলী সহ বর্তমান অনির্বাচিত নীশিরাতের সরকারের, গুম নামক কারাগারে বন্দি হয়ে আছেন। আমরা হারিয়েছি জাকির, সেলিম, মনোয়ারদের।
বিশ্বনাথের অসংখ্য নেতাকর্মী মিথ্যা মামলায় জেল, জুলুম, নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল ইতিমধ্যে ঘোষণা দিয়েছে, এই সরকারের অধীনে কোন নির্বাচনে অংশ গ্রহন করবে না এবং বিভিন্ন সভা সমাবেশে ইভিএম পদ্ধতির নির্বাচনে তীব্র আপত্তি করে আসছে।
সম্মানিত জাতীয়তাবাদী দলের মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীগণ আপনারা অনেকেই মনে করতে পারেন এটা স্থানীয় নির্বাচন, তাই আমি/আমরা অংশগ্রহন করলে দলের কি এমন ক্ষতি হবে। আপনাদের উদ্দেশ্যে যথেষ্ট শ্রদ্বারেখে বলছি, জাতীয়তাবাদী দলের কেউ এই নির্বাচনে অংশগ্রহন করলে অবশ্যই দলের ক্ষতি হবে, আপনারা এই নির্বাচনে অংশ গ্রহন করলে এই নীল নকশার নির্বাচন বৈধতা পাবে, বৈধতা পাবে ইভিএম পদ্বতি, ফিরে আসবে নির্বাচনী আমেজ।
এই সরকারের অধীনে কোন সময় সুষ্ঠ নির্বাচন আশা করা যায় না বরং আমরা এই নির্বাচন বর্জন করার মাধ্যমে ২০১৪ সালের সংসদ নির্বাচনের মতো জাতিকে একটি বার্তা দিতে পারি! আমরা সকলেই অবগত আছি ২০১৪ সালের সংসদ নির্বাচনের পরের দিন দেশের সকল জাতীয় দৈনিক পত্রিকা এবং সকল টেলিভিশনের খবর ছিল, বিশ্বনাথের একটি ভোট কেন্দ্রে (এম ইলিয়াছ আলী ভাইয়ের নিজ ইউনিয়নের, রামধানা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে) একটিও ভোট পড়েনি।
আমরা জাতীয়তাবাদী দলের নেতা কর্মীরা নির্বাচনে অংশ না নিলে বিশ্বনাথের প্রথম পৌরসভা নির্বাচন ভোটার সংকটের কারণে ব্যর্থ নির্বাচনে রুপ নিবে, লজ্জা পাবে নির্বাচন কমিশন, লজ্জা পাবে বর্তমান সরকার, লজ্জা পাবে ইভিএম পদ্ধতি। এই নির্বাচন বর্জনের মাধ্যমে আমরা বাড়াতে পারি বিশ্বনাথ উপজেলা ও পৌর বিএনপির সম্মান। সর্বোপরি বাড়বে আমাদের প্রিয় নেতা জনাব এম ইলিয়াস আলী ভাইয়ের সম্মান।
আমি মনে করি বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে আমাদের আন্দোলন জমে উঠেছে, এই আন্দোলনকে নস্যাৎ করতে এবং ইভিএম পদ্ধতির নির্বাচনের বৈধতা নিতে সরকার দেশের বিভিন্ন জায়গায় স্থানীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা দিয়েছে। আমাদের নিশ্চয়ই মনে আছে, বিশ্বনাথ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন এবং সদ্য সমাপ্ত খাজাঞ্চী ইউপি নির্বাচনের কথা। কিভাবে হয়েছিল আমরা সকলেই অবগত আছি।
আমাদের জাতীয়তাবাদী দলের নেতাকর্মী, সমর্থক সকলেই বিশ্বনাথ পৌরসভা নির্বাচন বর্জন করা বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনেরই অংশ। তাই আসুন সামান্য ব্যক্তি স্বার্থ বিসর্জন করে আমরা জাতীয়তাবাদী দলের বিশ্বনাথের সকল স্তরের নেতাকর্মী, সমর্থক বিশ্বনাথ পৌরসভা নির্বাচন বর্জন করি এবং যে খেলায় কে জয়লাভ করবে আগেই নির্ধারিত সেই পাতানো নির্বাচনের ভোট কেন্দ্রে ভোটারদের না যাওয়ার পরামর্শ দিয়ে ২০১৪ সালের মতো খবরের শিরোনাম হয়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের আন্দোলন সংগ্রামকে আরো বেগবান করি।’
সিলেটে তুষার খুনের ঘটনায় ৬ হিজড়া গ্রেফতার
বিশ্বনাথ :: সিলেটে হিজড়া সেজে থাকা তুষার আহমদ (২০) নামের তরুণকে হত্যার অভিযোগে ৬ হিজড়াকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) পৃথক অভিযানে এই ৬ জনকে গ্রেফতার করে কোতোয়ালি থানাপুলিশ।
বিষয়টি সোমবার সন্ধ্যায় নিশ্চিত করেছেন কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আলী মাহমুদ। এর আগে রবিবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন তুষারের ভাই।
গ্রেফতারকৃত হিজড়ারা হচ্ছেন- সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার ছােটদেশ গ্রামের মৃত মনাই মিয়ার সন্তান হৃদয় (২৮), রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া থানার মৃত সিদ্দিক মিয়ার সন্তান তানহা (২৫), সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই থানার হােসেনপুর গ্রামের মৃত এমরাজুল হকের সন্তান সুমি উজ্জল (১৮), হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট থানার পাঁচগাঁও গ্রামের মৃত কনাই মিয়ার সন্তান চাঁদনী সজল (৩০), পাপ্পু পাপিয়া ও হৃদয় রুপা। এর মধ্যে পাপ্পু পাপিয়া ও হৃদয় রুপা ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী বলে জানিয়েছেন পুলিশ।
রবিবার সকাল ৯টার দিকে সাবেহানীঘাট পুলিশ ফাঁড়ির খবরের ভিত্তিতে সিলেট মহানগরীর সােবহানীঘাটস্থ বনফুল এন্ড কোম্পানির দোকানের ২য় তলায় উঠার সিঁড়ির সামনে (নিচ তলায়) থেকে তুষারের মৃতদেহ উদ্ধার করে কোতোয়ালি থানাপুলিশ। খবর পেয়ে তুষারের মা নাছিমা বেগম ঘটনাস্থলে গিয়ে ছেলের লাশ শনাক্ত করেন। ময়না তদন্ত শেষে রবিবার বিকালে নগরীর মানিকপীর টিলায় তুষারের লাশ দাফন করা হয়।
লাশ উদ্ধারের মৃতের পরিবারের সদস্যদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়- তুষার নিজেকে ৩য় লিঙ্গের মানুষ পরিচয় দিতেন এবং সেই বেশে থাকতে পছন্দ করতেন। প্রাথামিকভাবে আমরা ধারণা করছি এটি একটি হত্যাকাণ্ড। কারণ তার গলায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এদিকে রবিবার তুষারের ভাই হিমেল আহমদ রাফি বলেন- আমরা ভাই হিজড়া নয়। ছোটবেলায় একসঙ্গে আমাদের খতনা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু খাসদবির প্রাইমারি স্কুলে পড়ার সময় সে অদ্ভূত আচরণ করতে থাকে এবং একসময় তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের সঙ্গে চলাফেরা করতে থাকে।
তিনি আরও বলেন- প্রায় প্রতিদিন রাতই তুষার তার হিজড়া বন্ধুদের সঙ্গে ঘর থেকে বের হয়ে যায়। ফিরে পরদিন সকালে। এ ব্যাপারে তাকে বার বার নিষেধ করেও কথা মানানো যায়নি। শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকেও এভাবে তার এক হিজড়া বন্ধু তাকে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে যায়।
তবে ওই হিজড়াকে আমি কখনো তার সঙ্গে দেখিনি। রাতে ওই হিজড়ার সঙ্গে বেরিয়ে গিয়ে আর রাতে ঘরে ফেরেনি তুষার। সকালেই জানতে পারি তার লাশ সোবহানীঘাটের ওই জায়গা থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।
কোতোয়ালি থানার ওসি) মোহাম্মদ আলী মাহমুদ বলেন- মামলা দায়েরের পরপরই আমরা বিশেষ অভিযান পরিচালনা করি। প্রথমে চারজনকে গ্রেফতার করি, তাদের দেওয়া তথ্যমতে পরিকল্পনাকারী দুজনকে গ্রেফতার করি।
তিনি জানান- প্রথমে গ্রেফতার করা ৪ হিজড়া ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে আমাদের কাছে স্বীকারোক্তি দিয়েছে। তাদের আজ (সোমবার) বিকেলে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। আর বাকি দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তাদের আগামীকাল (মঙ্গলবার) আদালতে প্রেরণ করা হবে।
সিলেটে ভুয়া ব্যাংক স্টেটমেন্ট-সার্টিফিকেট তৈরি : পরিচালক আটক
বিশ্বনাথ :: ব্যাংক স্টেটমেন্ট ও সার্টিফিকেটসহ বিভিন্ন ভুয়া ডকুমেন্ট তৈরি করে শিক্ষার্থীদের যুক্তরাষ্ট্র পাঠানোর নামে প্রতারণার অভিযোগে সিলেটে একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আমেরিকান দূতাবাসের দায়ের করা মামলার ভিত্তিতে আব্দুল্লাহ আল নোমান (৩৬) নামের ওই যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে।
নোমান সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার রাজনপুর গ্রামের আব্দুস সাত্তারের ছেলে ও সিলেট মহানগরীর জেল রোড পয়েন্টস্থ সিলকো টাওয়ারের ‘এডুকেশন কেয়ার’ নামক প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা এবং পরিচালক।
সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১টার দিকে তার প্রতিষ্ঠান ‘এডুকেশন কেয়ার’ থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখ পিপিএম জানান, যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানোর নামে ওই ‘এডুকেশন কেয়ার’ বিভিন্ন জাল কাগজ, ব্যাংক স্ট্যাটমেন্ট, সার্টিফিকেট তৈরি করে ভিসা প্রসেসিংয়ের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে।
প্রতারণার শিকার শিক্ষার্থীরা ভিসার আবেদন করে সাক্ষাৎকারের জন্য গেলে বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের নজরে আসে এবং দূতাবাসের দুই কর্মকর্তা সিলেট কোতোয়ালি থানায় হাজির মামলা দায়ের করেন। প্রাথমিক তদন্ত শেষে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় ‘এডুকেশন কেয়ার’র কর্ণধার নোমানকে আজ গ্রেফতার করা হয়।
আজবাহার আলী শেখ আরও জানান- প্রায় ১৬ জন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এমন প্রতারণা করেছে ‘এডুকেশন কেয়ার’। তদন্তের স্বার্থে প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ রেখেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃত নোমানের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।