শনিবার ● ১৯ নভেম্বর ২০২২
প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী » চুয়েটে সাংবাদিকদের উপর ছাত্রলীগের হামলা
চুয়েটে সাংবাদিকদের উপর ছাত্রলীগের হামলা
আমির হামজা, রাউজান প্রতিনিধি :: চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) ক্যাম্পাসে মাদক সেবনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়ে চুয়েট সাংবাদিক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক’কে হেনস্থা এবং সাংগঠনিক সম্পাদক’কে মারধরের ঘটনা ঘটে। বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সদ্য বিলুপ্ত কমিটির উপ গণ শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক আইদিদ আলমের নেতৃত্বে প্রায় ২০ থেকে ২৫ জনের একটি দল এই হামলা চালায়।
শিক্ষার্থীরা জানান বিশ্ববিদ্যালয়ে দিন দিন বেড়েছে মাদক সেবনের পরিমাণ। মাদকসেবীরা নিজেদের রুমে সেবন করেই বসে নেই। চট্টগ্রাম শহরগামী বাসগুলোতে জনসম্মুখে মাদক সেবন তাদের নিত্যনৈমিত্তিক কাজ। সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বারবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ বিষয়ে লেখালেখি করা হলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি।
এসব প্রেক্ষিতে গত মঙ্গলবার চুয়েট সাংবাদিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. গোলাম রব্বানী সাম্প্রতিক বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান এ বেপরোয়া মাদক সেবনের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি পোস্ট করেন। তার লেখায় ক্ষুব্ধ হয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ এর সদ্য বিলুপ্ত কমিটির উপ গণ শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক আইদিদ এর নেতৃত্বে প্রায় দশ জনের একটি দল মঙ্গলবার দুপুরে সমিতির সভাপতি জিওন আহমেদকে ও সাধারণ সম্পাদক সায়েদ চৌধুরীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্বরে ডেকে নেয়। তাদের চার ঘন্টার ও বেশী সময় তারা আটকে রেখে গালাগালি ও হেনস্থা করে। এসময় তারা বারংবার ছাত্রলীগের পরিচয় ব্যাবহার করে সাংবাদিক সমিতির নেতৃবৃন্দকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিতে থাকে। এবং সাংবাদিক সমিতি মাদকের বিরুদ্ধে ভবিষ্যতে যদি কোনো লেখালেখি করে তাহলে তাদের জীবনের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াবে বলে তারা হুশিয়ারি করতে থাকে। এরপর বেলা চারটার দিকে তারা সাংগঠনিক সম্পাদক মো: গোলাম রব্বানী কে ডেকে নেয়। প্রথমেই তার থেকে ফোন কেড়ে নেয় ও তাকে হেনস্থা করতে থাকে।পরবর্তীতে মো. আইদিদ আলম, মো. ইমরান হাসান মুরাদ, শেখ নাহিয়ান তার উপর ঝাপিয়ে পড়ে এলোপাতাড়ি ভাবে মারধর করে। এ ঘটনার বিচার চেয়ে বৃহস্পতিবার চুয়েট সাংবাদিক সমিতি একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত সকলের ৪৮ ঘন্টার মধ্যে ডোপ টেস্ট ও শারিরীক নির্যাতনকারী তিনজনের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার এর দাবি জানায়। এরপর সকাল ১০ঃ৪০ এর দিকে তারা জড়িতদের বহিষ্কারের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ দপ্তরের পরিচালক বরাবর একটি আবেদন পত্র জমা দেয়।
এবিষয়ে ছাত্র কল্যাণ দপ্তর, চুয়েট এর পরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, বিষয়টি আশঙ্কাজনক। ফেসবুকে পোস্ট করা নিয়ে যেকোনো শিক্ষার্থীর উপর এভাবে চড়াও হওয়া তাদের ঠিক হয় নি। গায়ে হাত তোলার মতো এমন কাজ করার অধিকার নেই তাদের।
অভিযোগ পত্র গ্রহণ করে পরিচালক আরও বলেন,আমরা ছাত্রকল্যাণ দপ্তর বিষয়টি খতিয়ে দেখার পর দ্রুত প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিবো। এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ রফিকুল আলম বলেন, ঘটনাটি দুঃখজনক। আমরা অভিযোগ খতিয়ে দেখে আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।