শুক্রবার ● ১৯ মে ২০২৩
প্রথম পাতা » এগিয়ে যাও বাংলাদেশ » আত্রাইয়ে গাছে গাছে ঝুলছে সুস্বাদু ফল কাঁঠাল
আত্রাইয়ে গাছে গাছে ঝুলছে সুস্বাদু ফল কাঁঠাল
নাজমুল হক নাহিদ, আত্রাই (নওগাঁ) প্রতিনিধি :: উত্তর জনপদের শষ্য ভান্ডার খ্যাত জেলা নওগাঁর আত্রাই উপজেলার গ্রাম গুলোর গাছে গাছে শোভা পাচ্ছে গ্রীষ্ম মৌসুমের বেশ জনপ্রিয় পুষ্টিগুণ সম্পন্ন রসালো জাতীয় ফল কাঁঠাল। যদিও পুরো পাকা পুক্ত কাঠাল হওয়ার সময় বাঁকী রয়েছে প্রায় আরো ২ মাস।
প্রবাদ আছে ‘গাছে কাঁঠাল গোঁফে তেল’- জ্যৈষ্ঠ মাসে এ কথাটি আর কথার কথা থাকে না। গাছে কাঁঠাল দেখলে এ কথা সবাই বলতেই পারে। বর্তমানে উপজেলার প্রতিটি এলাকার গাছে গাছে শোভা পাচ্ছে রসালো ফল কাঁঠাল। উপজেলার বিভিন্ন এলাকার বাড়ির পাশে, রাস্তার ধারে, জঙ্গলের ভেতরে থাকা গাছে ধরেছে প্রচুর পরিমানে কাঁঠাল। গাছের গোঁড়া থেকে আগা পর্যন্ত শোভা পাচ্ছে সর্বোচ্চ পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ এই ফল।
খাদ্য শষ্য ভান্ডার হিসেবে নওগাঁ জেলা বিখ্যাত হলেও এখানকার মানুষের অতি প্রিয় ফল ও তরকারি হিসেবে কাঁঠাল যুগ যুগ ধরে কদর পেয়ে আসছে। কাঁঠালের বিচি এখানকার মানুষের একটি ঐতিহ্যপূর্ণ তরকারি। বিশেষ করে কাঠালের বিচ দিয়ে শুটকি ভর্তা অত্যন্ত প্রিয় সকলের। বিভিন্ন ধরনের শাক ও কাঁঠালের বিচির সমন্বয়ে রান্না করা তরকারি এখানকার মানুষ তৃপ্তির সঙ্গে ভাত খেতে পারেন। তাছাড়া গবাদিপশুর জন্যও কাঁঠালের ছাল উন্নতমানের গো-খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এক প্রকারের সবুজ রঙের সুমিষ্ট গ্রীষ্মকালীন ফল। এটি বাংলাদেশের জাতীয় ফল হিসাবে সরকারীভাবে নির্ধারিত। বাংলাদেশের সর্বত্র কাঁঠাল গাছ পরিদৃষ্ট হয়। কাঁঠাল গাছের কাঠ আসবাবপত্র তৈরির জন্য সমাদৃত। কাঁঠাল পাতা বিভিন্ন প্রাণীর পছন্দের খাদ্য। তুলনামূলকভাবে বিশালাকার এই ফলের বহির্ভাগ পুরু এবং কান্টকাকীর্ণ, অন্যদিকে অন্তরভাগে একটি কান্ড ঘিরে থাকে অসংখ্য রসালো কোয়া। কাঁঠালের বৃহদাকার বীজ কোয়ার অভ্যন্তরভাগে অবস্থিত।
এ বিষয়ে উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের বাগান মালিক মো. ওয়াজেদ আলী প্রামানিক লিটন বলেন, কাঁঠাল আমার একটি প্রিয় ফল। এটি অত্যধিক পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ ফল। কাঁঠালের কোনো অংশই পরিত্যক্ত থাকে না। কাঁঠাল যেমন জনপ্রিয়, কাঁঠালের বিচি ও খুব জনপ্রিয় খাবার। বিভিন্ন সবজির সাথে কাঁঠালের বিচি মিশিয়ে ছোট মাছ দিয়ে রান্না করা তরকারি, শুটকি মাছের সাথে কাঁঠালের বিচি আর ডাঁটার তরকারি, কাঁঠালের বিচি ভর্তা এ রকম অসাধারণ সব স্বাদের খাবার তৈরিতে কাঁঠাল বিচি আলুর বিকল্প হিসাবে ব্যবহার করা হয়। কাঁঠালের কদরও বহুগুণের এমন কথা জানালেন কাঁঠালপ্রেমি প্রবীণ ব্যক্তিরাও। বহুগুণ সমৃদ্ধ এ কাঁঠাল এখানকার হাট-বাজারে এখনও উঠতে শুরু করেনি। তবে জ্যৈষ্ঠের শেষ ও আষাঢ় মাসের শুরু থেকে এখানকার হাট-বাজারে কাঁঠাল কেনাবেচা শুরু হবে এমনটি কাঁঠাল ব্যবসায়ীদের ধারণা।
এ ব্যাপারে উপজেলার ভবানীপুর ব্লকের উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা মো. জাহিদ হাসান বলেন, কাঁঠাল কাঁচা ও পাকা দুই অবস্থাতেই সমান জনপ্রিয়। এ বছর আবহাওয়া অনুক’লে থাকায় কাঁঠালের ভালো ফলন হয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তাপস কুমার রায় বলেন, এ উপজেলায় তেমন একটা কাাঁঠালের বাগান নেই তবে দিন দিন বাড়েই চলেছে। তিনি আরো বলেন গত বছরের তুলনায় এ বছর উপজেলায় কাঁঠাল ভালো হয়েছে। দিন দিন উপজেলার মানুষের মাঝে কাঁঠালের চারা রোপনের আগ্রহ বাড়ছে।
আত্মহত্যা ? দায়বদ্ধতা ? এ ভাবনায় ওসি তারেকুর রহমান সরকার
আত্রাই :: প্রতিনিয়ত বেড়ে চলেছে আত্মহত্যার প্রবণতা। কখনো সাংসারিক কোলাহল, কখনো ছেলে-মিয়ের সম্পর্ক বা সম্পর্কের বিয়ে মেনে না নেওয়ার প্রবণতা, কখনো শ্বশুর বাড়ীতে খাপ খাওয়াতে না পারা। এসবের মূলে অল্প বয়স বা বাল্য বিয়েকে দায়ি করা হচ্ছে। আর এ আত্মহত্যায় আমাদের কোন করণীয় আছে? বা আমরা তাতে দায় এড়াতে পারি কিনা এমন ধারণা থেকে আত্রাই থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তারেকুর রহমান সরকার তাঁর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গফ. ঞধৎবয় এ একটি আটিকেল লিখেছেন।
লিখাটি হুবহু তুলেধরা হলো-আমার নাবালিকা কন্যাকে ভাল ঘর বর এর লোভে তেমন কাউকে না জানিয়ে বিয়ে দিয়ে দিলাম। মেয়ের নতুন সংসার মেনে নিতে সমস্যা হচ্ছে। ভারি গলায় বললাম, “মানিয়ে নাও। সবারই সংসারে এমন হয়।” গভীরে ঢুকলাম না, মেয়ের কথা বুঝার চেষ্টা করলাম না। শ্বশুর বাড়ীর প্রতিটি সদস্য অথবা সে বাড়ীর দু’ একজন বিষাক্ত মানুষের সাথে আপনার আদরের ছোট্ট মেয়েটি এডজাস্ট করতে পারছে না। তবুও আপনি বাবা, মা হিসেবে মেয়েকে না বুঝে বিষয়টি হালকা করে নিচ্ছেন, উল্টো মেয়েকেই দোষারোপ করছেন। এক সময় ছেলের পরিবারও বিষয়টি জেনে মেয়েটাকে আরো বেশি নির্যাতন করে। ফলাফল কাউকে আর মনের কথা বলতে না পেরে, কোথাও ঠাঁই না পেয়ে বেছে নেয় আত্মহত্যা। হয়তো তখন আপনার চেতনা ফিরে। কিন্তু তৎক্ষণে যা হারাবার তা শুধু একান্ত আপনিই হারিয়েছেন।
আবার নাবালক, নাবালিকাদের প্রেম, অবুঝ মনের ভালবাসা, অনেক সময় ১২ বছর বয়সের বাচ্চাদেরও দেখেছি আত্মহত্যা করতে। আমরা বাচ্চাদের তেমন খোঁজ নেই না, কাজে ব্যস্ত থাকি। ইমু, মেসেঞ্জার, ফেসবুক, টিভি সিরিয়ালে সময় দিতেই সময় শেষ হয়ে যায়। বাচ্চাদের সাথে বন্ধুর মত করে মেশার, তাদের কথা শুনার কিংবা বুঝার সময় পাইনা। বাচ্চারা ভুল করে বসে। অনেক সময় শারিরীক সম্পর্কেও জড়ায়। আমরা যখন জানতে পারি তখন অনেক দুরে তার শেকড়। কিন্তু না বুঝে একটানে তুলে ফেলতে চাই। আবেগী বাচ্চারা নিজেদের ক্ষতি করে বসে। নিভে যায় প্রাণ প্রদীপ।
কখনো কখনো দাম্পত্য জীবনে এত বেশি প্রেম, প্রতারনা সহ্য করার ক্ষমতাও থাকে না। অন্যকে সাজা দেওয়ার জন্য নিজের জীবনাবসানের সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে অনেকে। আত্মহত্যা প্রবনতা একটা মানসিক রোগ। যে একবার মুখে অথবা আচার আচারণে এমন প্রবনতা প্রকাশ করবে তখন মনে করতে হবে, সে মানসিক রোগে আক্রান্ত তার চিকিৎসার দরকার। আর সবচেয়ে বেশি দরকার সময়। আপন মানুষদের সময়। আপনার আশে পাশে যারা আছে, আপনার পরিবারের সদস্য, প্রতিবেশী সবার প্রতি সতর্ক নজর রাখুন। কোন ধরনের অস্বাভাবিক আচরণ দেখলে বুঝার চেষ্টা করুন। ঘটনার গভীরে যান, গুরুত্ব দিন। প্রয়োজনে চিকিৎসক ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সাহায্য নিন। কোন আত্মহত্যা কিংবা অস্বাভাবিক মৃত্যু আমাদের কাম্য নয়। সুস্থ ও সুন্দর একটা সমাজ হোক সবার একান্ত আপন।