সোমবার ● ২৮ অক্টোবর ২০২৪
প্রথম পাতা » এগিয়ে যাও বাংলাদেশ » চাপাচাপি করে কোন কিছু বাস্তবায়ন করা যাবেনা
চাপাচাপি করে কোন কিছু বাস্তবায়ন করা যাবেনা
আজ সকালে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির উদ্যোগে “অন্তর্বর্তী সরকারের ৮০ দিনঃ গতিমুখ ও চ্যালেঞ্জসমূহ ” শীর্ষক আলোচনা সভায় জাতীয় নেতৃবৃন্দ বলেন, রাজনৈতিক দলসহ দেশবাসীর সমর্থনের মধ্য দিয়ে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারকে জাতীয় ঐক্যমতের ভিত্তিতেই দেশ পরিচালনা করতে হবে। জনগণের ঐক্য বিনষ্ট হয় এরকম পদক্ষেপ থেকে অন্তর্বর্তী সরকার ও সংশ্লিষ্ট সবাইকে বিরত থাকতে হবে। তারা বলেন, তিনমাস আগের ঐক্য এখন ঝুঁকির মধ্যে পড়ে যাচ্ছে যা জনগণের মধ্যে আবার উদ্বেগ তৈরী করছে। তারা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থ হবার কোন সুযোগ নেই।
আলোচনা সভার শুরুতে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির পক্ষ থেকে অন্তর্বর্তী সরকারের ৮০ দিনের উপর ১০ টি পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেন পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক। তিনি বলেন, সামষ্টিক অর্থনীতিতে গতি সঞ্চারসহ বেশ কিছু ক্ষেত্রে সরকারের সাফল্য রয়েছে, কিন্তু নিত্যপণ্যের বাজার, জননিরাপত্তা, প্রশাসনসহ নানাক্ষেত্রে এখনও স্বস্তি আসেনি।
তিনি বলেন, বিশেষ মহলের নানা এজেন্ডার চাপে সরকারকে পথ হারালে চলবেনা। সরকারের নিরপেক্ষতাও প্রশ্নবিদ্ধ হয় এমন কিছু করা যাবেনা। তিনি ক্ষোভের সাথে উল্লেখ করেন, নতুন নতুন ইস্যুর ভিড়ে সংস্কার এজেন্ডা এখন পিছনে পড়ে গেছে।তিনি ঐক্যমতের বিষয়সমূহ বিবেচনাশ নিয়ে জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে সরকারকে তাদের রাজনৈতিক অগ্রাধিকার ঘোষণা করার আহবান জানান। তিনি বলেন, কাউকে নিষিদ্ধ করা সংকটের সমাধান নয় , বহুত্ববাদী গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক সমাজে রাজনৈতিক বৈরী প্রতিপক্ষকে রাজনৈতিকভাবেই মোকাবেলা করা প্রয়োজন। তিনি বলেন , চাপিয়ে দিয়ে কোন কিছু বাস্তবায়ন করা যাবেনা।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, সংস্কার ও নির্বাচনের প্রশ্নে আমাদের সকলের মধ্যে ঐক্যমত রয়েছে। এসব নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তোলার কোন সুযোগ নেই। তিনি বলেন, বিভিন্ন মহলের বিভিন্ন ইস্যু থাকতে পারে। কিন্তু তার জন্য সরকারকে বিভ্রান্ত হলে চলবেনা। তিনি জাতীয় ঐক্য আরও জোরদার করে নির্বাচনের পথে হাটতে সরকারের প্রতি আহবান জানান।
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বিপুল সমর্থন থাকার পরে-ও সরকার ভালোভাবে দেশ চালাতে পারছেনা। কারা দেশ চালাচ্ছে তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।তিনি বলেন আমরা আস্থা রাখতে চাই যে, সরকার সফল হবে এবং দেশকে অভিষ্ঠ গণতান্ত্রিক উত্তরণের ধারায় নিয়ে যাবে।
রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে এই সভার আয়োজন করা হয়েছে।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক এর সভাপতিত্বে এই আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্টান্ডিং কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী , নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদূর রহমান মান্না, বাংলাদেশ জাসদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহবায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, ১২ দলীয় জোটের সমন্বয়কারী এহসানুল হুদা, এবি পার্টির মহাসচিব মুজিবুর রহমান মঞ্জু, জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় নেতা আশরাফ আলী আখন্দ, এলডিপি’র সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন সেলিম, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সাংগঠনিক সম্পাদক ইমরান ঈমন, গণ অধিকার পরিষদের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান আল মামুন, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র পরিষদ এর আহবায়ক শেখ আবদুন নূর প্রমুখ।
আলোচনা সভা পরিচালনা করেন পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য আকবর খান।
উপস্থিত ছিলেন পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য বহ্নিশিখা জামালী, আনছার আলী দুলাল, মীর মোফাজ্জল হোসেন মোশতাক, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রাশিদা বেগম, মীর রেজাউল আলম, ফায়েজুর রহমান মনির, মো. ফিরোজ প্রমুখ।
কবি মোহন রায়হান, এডভোকেট তাসমিন রানাসহ অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন।
সভার শুরুতে গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট দাঁড়িয়ে নিরবতা পালন করা হয়।