রবিবার ● ১৭ নভেম্বর ২০২৪
প্রথম পাতা » এগিয়ে যাও বাংলাদেশ » আমরা বাঙালি নই, পার্বত্য চট্টগ্রাম তথা দেশের ক্ষুদ্র বড়য়া জনগোষ্ঠী
আমরা বাঙালি নই, পার্বত্য চট্টগ্রাম তথা দেশের ক্ষুদ্র বড়য়া জনগোষ্ঠী
পলাশ চাকমা, রাঙামাটি :: আমরা বাঙালি নই, পার্বত্য চট্টগ্রাম তথা দেশের ক্ষুদ্র বড়ুয়া জনগোষ্ঠী অথচ আমাদেরকে বাঙালি চাপিয়ে দিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামেও দীর্ঘ বছর ধরে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। তাই বড়ুয়া জনগোষ্ঠী বাঙালি নয়, বাংলাদেশী তাই আমাদের অধিকারও নিশ্চিত করতে হবে। রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদে গঠিত অন্তর্বতী পরিষদে বড়ুয়া জনগোষ্ঠী থেকে এক জন সদস্য অন্তর্ভুক্তির করার দাবি জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বরাবের জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্মারকলিপি দেওয়া সহ রবিবার ১৭ নভেম্বর সকালে শহরের কোর্ট বিল্ডিং এলাকার কসমস রেস্টেুরেন্টের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলন করে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম বড়ুয়া সংগঠন বীরমুক্তিযোদ্ধা ডা. বাদল বরণ বড়ুয়া, সাধারণ সম্পাদক নির্মল বড়ুয়া মিলন, বড়ুয়া জনকল্যাণ সংস্থা’র পক্ষে আহবায়ক শ্যামল চৌধুরী, সদস্য সচিব ধীমান বড়ুয়া সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে নির্মল বড়ুয়া মিলন বলেন, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদে যাদেরকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বেশিরভাগ সদস্য জনগণের অপরিচিত এবং ফ্যাসিস্ট সরকারের সুবিধাভোগী। এমনও আছে একই পরিবারের একাধিক সদস্য রয়েছে, যা বর্তমান অন্তবর্তী সরকারের সুনাম দারুণভাবে ক্ষুন্ন হচ্ছে। সেই সাথে চরম বৈষম্যেরও সৃষ্টি হয়েছে।
লিখিত বক্তব্যে তিনি আরো বলেন, বড়ুয়া জনগোষ্ঠী বাঙালি নয়, বাংলাদেশী ও পিছিয়ে পড়া পার্বত্য চট্টগ্রাম তথা দেশের বৌদ্ধ ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠী। স্বাধীনতার পর থেকেই এ পর্যন্ত কোন সরকারই বড়ুয়া জনগোষ্ঠীকে সরকারি বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত করে আসছে। রাজনৈতিক পঠপরিবর্তনে বিভিন্ন সময়ে দাবির করলেও বর্তমান অন্তবর্তী সরকার কর্তৃক পুনগর্ঠিত তিন পার্বত্য জেলা পরিষদে বড়ুয়া জনগোষ্ঠী থেকে কোন সদস্য নিয়োগ বা অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি যা দুঃখ জনক। জেলা পরিষদ পুর্নগঠনে বড়ুয়া জনগোষ্ঠীর কোনো সদস্যের নাম না থাকায় চরম বৈষম্যের স্বীকার হয়েছে। তাই রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদে বড়ুয়া জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধি অর্ন্তভুক্ত করার জন্য অন্তবর্তী সরকারের নিকট জোর দাবি জানাচ্ছি।
তিনি আরো বলেন, জেলা পরিষদ গঠনে এবার কাউখালী, রাজস্থলী, জুরাছড়ি ও বরকল থেকে কোনো প্রতিনিধি রাখা হয়নি। তাই নানা মহলে চলছে সমালোচনা। এই পরিষদে হত্যা মামলার আসামিকেও সদস্য হিসেবে রাখার গুঞ্জন উঠেছে। নবগঠিত এই পরিষদ থেকে বিতর্কিতদের বাদ দিয়ে সংস্কারের দাবি জানিয়ে এরই মধ্যে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন, চার উপজেলার সুশীল সমাজের নেতারা প্রতিবাদ করে আসছে। সংস্কার করে বঞ্চিতদের অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে নতুন করে দ্রুত পরিষদ ঘোষণার দাবিও জানান। সংবাদ সম্মেলন শেষে প্রধান উপদেষ্টার বরাবের জেলা প্রশাসকের নিকট স্মারকলিপি দেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, গত ৭ নভেম্বর পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব তাছলিমা বেগম স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে অন্তবর্তীকালীন চেয়ারম্যানসহ ১৫ সদস্য বিশিষ্ট রাঙাামাটি জেলা পরিষদের অন্তবর্তী পরিষদ গঠিত হয়। এর পর থেকেই এ পরিষদের বিরুদ্ধে নানান বৈষম্যের অভিযোগ করে আসছে রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বিভিন্ন সংগঠন।