
শনিবার ● ১৫ মার্চ ২০২৫
প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী » রাঙামাটিতে মাদক ব্যবসায়ীদের হামলা ও হুমকির প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন
রাঙামাটিতে মাদক ব্যবসায়ীদের হামলা ও হুমকির প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন
রাঙামাটি :: আজ শনিবার ১৫ মার্চ সকাল সাড়ে ১১টায় রাঙামাটি শহরের মোল্লাপাড়া এলাকার বাসিন্দা ভুক্তভোগী মো. এসহাক ভান্ডারী তার নিজের বাসায় মাদক ব্যবসায়ীদের হামলা, হুমকি ও মিথ্যা অভিযোগের প্রতিবাদে এক সংবাদ সম্মেলন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে এসহাক ভান্ডারীর ছেলে মোহাম্মদ নূর হোসেন উপস্থিত সাংবাদিকদের সামনে প্রকৃত ঘটনা বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেন। তিনি মাদক ব্যবসায়ীদের অপকর্ম ও তাদের ভয়ভীতি প্রদর্শনের বিষয়ে তথ্য প্রকাশ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে মোহাম্মদ নূর হোসেন জানান, গত ৯ মার্চ ২০২৫, রাত আনুমানিক ১১টার দিকে, আমার বাবা নাইট গার্ড হিসেবে একটি নির্মানাধীন বিল্ডিংএ ডিউটিরত অবস্থায় ছিলেন। এসময় দেলোয়ার হোসেন শাকিল ওরফে দেলু এবং তার সঙ্গে আরও কয়েকজন যুবক একটি নির্মাণাধীন ভবনে প্রবেশের চেষ্টা করে। তখন আমার বাবা তাদের সেখানে প্রবেশের কারণ জানতে চাইলে তারা স্পষ্টভাবে জানায়— “আমাদের ভিতরে কাজ আছে, আমরা কিছুক্ষণ বসে চলে যাবো”
যেহেতু আমার বাবা সেখানে নাইট গার্ড হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন তাই তিনি বাধা দিলে তারা আমার বাবাকে হুমকি দিতে থাকে এবং একপর্যায়ে শারীরিকভাবে হামলা চালায়। তখন আমার বাবা আমকে ফোন করে এবং ঘটনাস্থলে যেতে বলেন , আমি এলাকাবাসীর সহায়তায় ঘটনাস্থলে পৌছাই। আমাদের উপস্থিতি টের পেয়ে দেলোয়ার ও তার সহযোগীরা মোটরসাইকেল ফেলে পালিয়ে যায়।
কিছুক্ষণ পর দেলোয়ার তার মোটরসাইকেল নিতে এলে, আমরা তাকে আটক করি এবং সে স্বীকার করে যে, সে মাদক ব্যবসা ও সেবনের সঙ্গে জড়িত। আমাদের কাছে তার স্বীকারোক্তির ভিডিও ক্লিপ সংরক্ষিত রয়েছে। আমরা তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম, কিন্তু সে সুযোগ বুঝে পালিয়ে যায়।
এই ঘটনার জেরে, ১১ মার্চ রাত ৮টার দিকে আমার বাবা যখন চায়ের দোকানে বসেছিল তখন দেলোয়ার ও তার সহযোগীরা অতর্কিত হামলা চালায়। তারা শুধু আমার বাবকেই নয়, ঘটনার দিন উপস্থিত থাকা অন্যান্য কয়েকজনের ওপরও হামলা করে।
আমার বাবাকে মারছে এই খবর শুনে আমি আমরা ভাই বোন ও আমার মা ঘটনাস্থলে গেলে, আমাদেরকেও মারধর করা হয়। আমার বোনকে টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে গিয়ে নির্মমভাবে মারধর করে ফেলে রাখা হয়।
আমাকে ও আমার বাবাকে এলাকাবাসী হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশের উপস্থিতির খবর পেয়ে হামলাকারীরা পালিয়ে যায় এবং এলাকাবাসী আমার বোনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
১২ মার্চ সকাল ১১ টায় থানায় মামলা দায়ের করি, যার পরিপ্রেক্ষিতে ১২ মার্চ রাতেই পুলিশ দেলোয়ার হোসেন শাকিল ওরফে দেলুকে গ্রেপ্তার করেন।
কিন্তু দুঃখের বিষয়, তার গ্রেপ্তারের পর থেকে আমাদের পরিবারের ওপর হুমকির পরিমাণ আরও বেড়ে গেছে। বর্তমানে আমি ও আমার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
১৩ মার্চ, দেলোয়ারের পরিবার সংবাদ সম্মেলন করে দাবি করে যে, নদীতে জাল ফেলা নিয়ে বিরোধের কারণে এ ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই— তাদের এই বক্তব্য সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
মূল ঘটনা হচ্ছে— ইয়াবা ব্যবসাকে ধামাচাপা দিতে নদীতে জাল ফেলার মিথ্যা গল্প সাজানো হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে এসহাক ভান্ডারীর ছেলে মোহাম্মদ নূর হোসেন আরো জানান, আমরা মাদকমুক্ত সমাজ চাই। আমরা চাই, রাঙামাটি প্রশাসন কার্যকর ব্যবস্থা নিয়ে আমাদের এলাকা ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে রক্ষা করুক।