
বৃহস্পতিবার ● ২০ মার্চ ২০২৫
প্রথম পাতা » এগিয়ে যাও বাংলাদেশ » রাঙ্গুনিয়াতে গ্রাম আদালত সেবা নিয়ে মতবিনিময়
রাঙ্গুনিয়াতে গ্রাম আদালত সেবা নিয়ে মতবিনিময়
ইউসুফ, রাঙ্গুনিয়া :: গ্রাম আদালতকে শক্তিশালী করতে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়ন গ্রাম আদালত বিষয়ক মতবিনিময় সভা এবং ভিডিও প্রদর্শনী সাবেক চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য ও স্থানীয় জনগণ নিয়ে গ্রাম আদালতের সেবা এবং আইন ও বিধিমালা নিয়ে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নে ২০ মার্চ বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় গ্রাম আদালত বিষয়ক কমিউনিটি মতবিনিময় সভা এবং ভিডিও প্রদর্শনী ইউনিয়ন সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়।
এতে সভাপতিত্ব করেন সাবেক চেয়ারম্যান দিদারুল আলম জমিস,ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নেসারুদ্দিন পিয়ারু। অল্প সময়ে স্বল্প খরচে স্থানীয় পর্যায়ের দেওয়ানী ও ফৌজদারি বিরোধ স্থানীয়ভাবে নিস্পত্তির জন্য চালু করা হয়েছে গ্রাম আদালত।
গণ প্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের স্থানীয় সরকার বিভাগ ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন ও ইউএনডিপি বাংলাদেশ এর সহযোগিতায় সারা দেশের ৬১টি জেলার প্রতিটি ইউনিয়নে গ্রাম আদালত প্রকল্প চলমান আছে।
গ্রাম আদালতের বিচারিক কার্যকক্রমের অগ্রগতি ও নথিপত্র যথাথত ভাবে প্রস্তুত ও সংরক্ষণ বিষয়ে দক্ষতা উন্নয়ন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ভিডিও শো ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
গ্রাম আদালত প্রকল্পের উপজেলা সমন্বয়কারী মিলটন চাকমা এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত এ সভার সভাপতি তার বক্তব্যে গ্রাম আদালতের বিচারিক সেবার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে বলেন, আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে স্থানীয় বিরোধ স্থানীয়ভাবে সমাধানের সুযোগ রয়েছে গ্রাম আদালতে। গ্রাম আদালত বিরোধ নিস্পত্তির জন্য ইউনিয়নের প্রশাসনিক কর্মকর্তা, সদস্য ও স্থানীয় সকল নেতৃবৃন্দের সবাইকে কাজ করতে হবে।
সভায় উপজেলা সমন্বয়কারী মিলটন চাকমা প্রজেক্টর এর মাধ্যমে বিভিন্ন স্লাইট প্রদর্শন করে কিভাবে, গ্রাম আদালতের মাধ্যমে ছোট খাটো ফৌজদারী ও দেওয়ানী মামলা নিষ্পত্তি করা হয়। দেওয়ানী মামলার ক্ষেত্রে ২০ টাকা আর ফৌজদারী মামলার জন্য মাত্র ১০ টাকা ফিস দিয়েই ইউনিয়ন পরিষদে বিচারিক সেবা পাওয়ার সুযোগ আছে।
ইউনিয়ন পরিষদের মামলার আবেদনকারী ও প্রতিবাদী উভয়ের পক্ষে ২ জন ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য এবং ২ জন গণ্যমান্য ব্যক্তি মনোনয়ন করার মধ্যদিয়ে গ্রাম আদালত গঠন করা হয়।
ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গ্রাম আদালতের চেয়ারম্যান হিসেবে বিবেচিত হয়। চেয়ারম্যান এর নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন থাকলে চেয়ারম্যান দায়িত্ব হস্তান্তর করে পছন্দ মতো বিচারক নিয়োগের সুযোগ রয়েছে গ্রাম আদালতে। চেয়ারম্যান ও মনোনীত ৪ জন সদস্য মিলেই ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম আদালতের মাধ্যমে ন্যায় বিচার নিশ্চত করা সম্ভব। এর ফলে বিচারপ্রার্থীরা নিজ নিজ এলাকায় নিজেদের সমস্যা সমাধান করতে পারেন।
গ্রাম আদালতের মাধ্যমে প্রদেয় এ সকল সেবা সম্পর্কে গ্রামের পিছিয়ে পড়া জনসাধারণ এখনো জানে না। এর ফলে স্থানীয় সমস্যা সমাধানে থানায় ও জেলা কোর্টে গিয়ে অর্থ, সময় নষ্ট করার পাশাপাশি নানা ভোগান্তির শিকার হন তারা। বিশেষ করে নারীরা তাদের সমস্যা সমাধানে বাড়ির কাছেই পেয়েছে গ্রাম আদালত। নারীরা এ সেবা বিষয়ে না জানার কারণে তারা ও সেবা নিতে কম আসছেন গ্রাম আদালতে। সরকারী এ সেবা বিষয়ক ব্যাপক প্রচারণার উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান জানান উপজেলা কর্মকর্তা। তিনি বলেন, ইউনিয়ন পর্যায়ে সরকারী বেসরকারী উদ্যোগে আয়োজিত বিভিন্ন সভা, ওয়ার্কসপ ও প্রশিক্ষণে এ বিষয়টি আলোচনা করা দরকার।
গ্রামের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী বিশেষ করে নারী ও সুবিধাবঞ্চিতদের বিচারিক সেবা নিশ্চিত করার জন্য সরকার কাজ করছেন। তাদের মধ্যে গ্রাম আদালতের সেবা বিষয়ক তথ্য প্রচার করার প্রতি বেশি জোর দেন তিনি। বর্তমান প্রেক্ষাপটে কি ভাবে গ্রাম আদালতের কাজ চলমান রাখার বিষয়ে সকলের মতামত ও আলোচনা করা হয়।
সভায় ইসলামপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি সিরাজ উদ্দিন, প্রশাসনিক কর্মকর্তা সাজ্জাদ ইকবাল, উপজেলা যুবদল নিজামুদ্দিন, ইউপি সদস্য আরাফাত হোসেন, শামীমা আক্তার, স্মৃতি প্রভা, চেমন আরা পরিষদের উদ্যোক্তা সেকান্দর হোসেন, বৃহত্তর রাজানগর সাবেক ইউপি সদস্য চন্দ্র সেন তংচংগ্যা, ইউনিয়ন শ্রমিক দলের সভাপতি সালাম কোম্পানি, সাবেক ছাত্রনেতা খোরশেদ আলম, উত্তর জেলা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি ইব্রাহিম(রুমন) বাংলাদেশ জামাত ইসলামী ইউনিয়ন সভাপতি ইব্রাহিম খলিল, গ্রাম পুলিশের দফাদার কামাল উদ্দিন, রাঙ্গুনিয়া প্রেস ক্লাবের ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক বিষয়ে সম্পাদ মো. ইউসুফ স্থানীয় জন প্রতিনিধি, প্রশাসনিক কর্মকর্তা, ইউপি সদস্য, শিক্ষক, এনজিও কর্মী, গ্রাম পুলিশ প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।