বৃহস্পতিবার ● ১১ আগস্ট ২০২২
প্রথম পাতা » এগিয়ে যাও বাংলাদেশ » স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের আইন শক্তিশালীকরণের উদ্যোগ সময়োপযোগী
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের আইন শক্তিশালীকরণের উদ্যোগ সময়োপযোগী
সংবাদ বিজ্ঞপ্তি :: সংশোধনীর মাধ্যমে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালীকরণের উদ্যোগ গ্রহণ করায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে ধন্যবাদ জানিয়েছে তামাকবিরোধী ২১ সংগঠন। টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট- এসডিজি বাস্তবায়ন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোল- এফসিটিসি এর বাধ্যবাধকতা পূরণ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত তামাকমুক্ত বাংলদেশ অর্জনে সম্প্রতি তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। ইতিমধ্যে খসড়া সংশোধনী প্রস্তুত, ওয়েবসাইটে প্রকাশ এবং অংশীজনের মতামত গ্রহণের কাজ শেষ হয়েছে। তবে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষার এই গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ ভন্ডুল করতে তামাক কোম্পানিগুলো প্রেস কনফারেন্স, পলিসি ডায়লগ, মিডিয়া ক্যাম্পেইন প্রভৃতির মাধ্যমে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্য প্রচার শুরু করেছে। গতকাল ১০ আগস্ট ২০২২ বুধবার ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডস (সিটিএফকে) এর সহযোগিতায় প্রজ্ঞা’র (প্রগতির জন্য জ্ঞান) উদ্যোগে ২১টি তামাকবিরোধী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ভাচুর্য়াল গোলটেবিল বৈঠকে অংশ নিয়ে এসব বিষয়ে আলোচনা করেন। বক্তারা খসড়ায় অন্তর্ভুক্ত প্রতিটি সংশোধনী প্রস্তাবকে অত্যন্ত সময়োপযোগী বলে অভিহিত করেন এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে তামাক কোম্পানির অপতৎপরতায় বিভ্রান্ত না হয়ে খসড়াটি দ্রুত চূড়ান্ত করার আহ্বান জানান।
গোল টেবিল বৈঠকে জানানো হয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় প্রণীত খসড়া সংশোধনীর বিভিন্ন ধারা ভুলভাবে উপস্থাপন করে জনগণ এবং নীতিনির্ধারকদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে কোম্পানিগুলো। যেমন, ই-সিগারেট কম ক্ষতিকর এবং এটি নিষিদ্ধ হলে প্রচলিত সিগারেটের ব্যবহার বেড়ে যাবে ইত্যাদি। কিন্তু এসব তথ্য মোটেও সঠিক নয়। ই-সিগারেটসহ সবধরনের ভ্যাপিং পণ্য জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর বলেই ভারতসহ প্রায় ৩২টি দেশ এসব পণ্য নিষিদ্ধ করেছে। খসড়া সংশোধনী তৈরিতে তামাক কোম্পানির মতামত না নেয়া প্রসঙ্গে বক্তরা বলেন, জনস্বাস্থ্য বিষয়ক আইন বা বিধি প্রণয়নে তামাক কোম্পানি ও তাদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট কোনো গোষ্ঠির পরামর্শ বা মতামত গ্রহণ সুস্পষ্টভাবেই এফসিটিসি আর্টিক্যাল ৫.৩ এর লংঘন। বাংলাদেশ এই আন্তর্জাতিক চুক্তির প্রথম স্বাক্ষরকারী দেশ।
তামাকের কারণে প্রতিবছর প্রায় ১ লক্ষ ৬১ হাজার মানুষ মৃত্যু বরণ করেন। অসুস্থ ও পঙ্গুত্ব বরণ করেন আরো কয়েক লক্ষ মানুষ। তামাকজনিত এই ব্যাপক মৃত্যুরোধে ২০১৬ সালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোল (এফসিটিসি) এর আলোকে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
ভার্চুয়াল গোলটেবিল বৈঠকে মূল উপস্থাপনা তুলে ধরেন প্রজ্ঞা’র তামাক নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক প্রকল্প প্রধান হাসান শাহরিয়ার। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ভাইটাল স্ট্রাটেজিস এর মো. শফিকুল ইসলাম, ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডস (সিটিএফকে)- বাংলাদেশ এর লিড পলিসি অ্যাডভাইজর মো. মোস্তাফিজুর রহমান, জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেল (এনটিসিসি) এর সাবেক সমন্বয়কারী মুহাম্মাদ রূহুল কুদ্দুস, দি ইউনিয়নের অ্যাডভোকেট সৈয়দ মাহবুবুল আলম, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন এর অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী, ডব্লিউবিবি ট্রাস্ট এর নির্বাহী পরিচালক সাইফুদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ ক্যান্সার সোসাইটির প্রকল্প পরিচালক অধ্যাপক ডা. গোলাম মহিউদ্দিন ফারুক, ঢাকা আহছানিয়া মিশন এর হেলথ ও ওয়াশ সেক্টরের পরিচালক ইকবাল মাসুদ এবং প্রজ্ঞা’র নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের প্রমুখ। এছাড়া, স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশন, ডরপ, প্রত্যাশা, বিসিসিপি, নাটাব, আর্ক ফাউন্ডেশন, এইড ফাউন্ডেশন, উন্নয়ন সমন্বয়, ডাস, টিসিআরসি, বিইআর, মানস, গ্রাম বাংলা উন্নয়ন কমিটিসহ বিভিন্ন তামাকবিরোধী সংগঠনের প্রতিনিধিবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।