বৃহস্পতিবার ● ৪ মে ২০২৩
প্রথম পাতা » এগিয়ে যাও বাংলাদেশ » বুদ্ধপূর্ণিমা উপলক্ষে রাঙামাটিতে বর্ণাঢ্য ধর্মীয় মঙ্গল শোভাযাত্রা
বুদ্ধপূর্ণিমা উপলক্ষে রাঙামাটিতে বর্ণাঢ্য ধর্মীয় মঙ্গল শোভাযাত্রা
স্টাফ রিপোর্টার :: পার্বত্য ভিক্ষু সংঘ রাঙামাটি পৌরসভা ও সদর উপজেলা শাখা এবং বৌদ্ধ নর-নারীবৃন্দ কর্তৃক আয়োজিত দেশের সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে রাঙামাটিতে যথাযোগ্য ধর্মীয় মর্যাদায় বুদ্ধপূর্ণিমা উপলক্ষে বর্ণাঢ্য ধর্মীয় মঙ্গল শোভাযাত্রা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
বৌদ্ধ ধর্মের প্রবর্তক সাম্য, মৈত্রী ও মানবতার গৌবরময় প্রতীক মহামতি গৌতম বুদ্ধের জন্ম, বোধিজ্ঞান ও মহাপরিনির্বাণ এই ত্রিস্মৃতি বিজড়িত বিশ্ব বৌদ্ধদের সর্বোচ্চ প্রধান ধর্মীয় উৎসব এবং জাতিসংঘ ঘোষিত আন্তর্জাতিক ভেসাক-দিবস শুভ বুদ্ধ পূর্ণিমা (বুদ্ধ জয়ন্তী) এবার পালিত হচ্ছে ২৫৬৭ উপলক্ষে বিশ্বশান্তি কামনায় “বুদ্ধ পূর্ণিমা”।
বুদ্ধ পূর্ণিমা মুলতঃ বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব। বৈশাখ মাসের এই পূর্ণিমা দিবসে মহামানব বুদ্ধের জীবনের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা সংঘটিত হয়েছিল বলে দিনটি ‘বুদ্ধ পূর্ণিমা’ নামে খ্যাত। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের কাছে এই দিনটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
বৃহস্পতিবার ৪ মে সকাল ৮টায় পার্বত্য ভিক্ষু সংঘ বাংলাদেশের উদ্যোগে রাঙামাটি পৌর ও সদর উপজেলার বিভিন্ন বিহারের অধ্যক্ষ,উপাধ্যক্ষ,ভিক্ষু ও দায়ক-দায়িকাদের অংশগ্রহণে রাঙামাটি সরকারি কলেজ মাঠ থেকে কাঠালতলী মৈত্রী বিহার পর্যন্ত বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভা যাত্রা শেষে ধর্মীয় আলোচনা সভায় মিলিত হয়। এতে রঙ-বেরঙের বৌদ্ধ পতাকা হাতে নিয়ে হাজার-হাজার পুণ্যার্থী বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী নর-নারীবৃন্দ অংশ নেন।
খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি দীপংকর তালুকদার এমপি, প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বেলুন উড়িয়ে মঙ্গল শোভাযাত্রার উদ্বোধন করেন।
এসময় পার্বত্য ভিক্ষু সংঘ বাংলাদেশের সভাপতি শ্রদ্ধালংকার মহাথের, সহ সভাপতি ভদন্ত শুভদর্শী মহাথের, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান চেয়ারম্যান অংসুইপ্রু চৌধুরী, রাঙামাটি কোতয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আরিফুল আমিন, স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মী, রাঙামাটি পৌর ও সদর উপজেলার অধ্যক্ষ,উপাধ্যক্ষ, বিভিন্ন বিহারের বৌদ্ধ ভিক্ষু সংঘ ও দায়ক-দায়িকাগণ উপস্থিত ছিলন।
বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভা যাত্রা শেষে ধর্মীয় আলোচনা সভায় ভিক্ষু সংঘ বুদ্ধ পূর্ণিমার মধ্য দিয়ে সকল প্রকার লোভ, হিংসা, মোহ সংঘাতসহ যাবতীয় খারাপ কাজ পরিহার করে সৎ পথে চলতে ও মৈত্রীপূর্ণ মনোভাব নিয়ে একে অপরে সুখে-শান্তিতে বসবাস করার হিতোপদেশ দেন।
এছাড়াও বৌদ্ধ বিহারগুলোতে আলোচনা সভা, পুরস্কার বিতরণ ও ধর্মানুষ্ঠান, প্রদীপ প্রজ্জ্বলন, শান্তি ও মঙ্গল শোভাযাত্রা, ধর্মীয় আলোচনা সভা, সমবেত প্রার্থনা, আলোচনা সভা ও বুদ্ধ পূজা, পিন্ডদান, প্রাতঃরাশ, পঞ্চশীল গ্রহণ, সংঘদান, অষ্টপরিষ্কার দান, বুদ্ধমূর্তি দান, প্রদীপ পূজা, প্রাত্যহিক বন্দনার আবৃত্তি প্রতিযোগিতাসহ দিনব্যাপী কর্মসূচি পালিত হচ্ছে।
এসময় পৃথিবীর মানব জাতির শান্তি ও মঙ্গল কামনায় বিশেষ প্রার্থনা করা হয়।
এহেন মহৎ পূণ্য অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে অনুষ্ঠানকে সাফল্য মণ্ডিত করায় পার্বত্য ভিক্ষু সংঘ রাঙামাটি পৌরসভা ও সদর উপজেলা শাখার বুদ্ধ পূর্ণিমা উদযাপন কমিটির সাধারন সম্পাদক শীলজ্যোতি থের ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ ১৯৯৯ সালের ৫৪/১১৫এর রেজুলেশনের মাধ্যমে, বিশ্বের প্রাচীনতম ধর্মগুলির মধ্যে একটি বৌদ্ধ ধর্ম আড়াই সহস্রাব্দেরও বেশি সময় ধরে যে অবদান রেখেছে এবং তা অব্যাহত রেখেছে তা স্বীকার করার জন্য আন্তর্জাতিকভাবে বুদ্ধ পূর্ণিমা দিনটিকে ভেসাক দিবস হিসাবে স্বীকৃতি দিয়েছেন।