বৃহস্পতিবার ● ১৮ মে ২০২৩
প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী » রাউজানে অপহরণের পর হত্যার অভিযোগ
রাউজানে অপহরণের পর হত্যার অভিযোগ
আমির হামজা, রাউজান প্রতিনিধি :: চট্টগ্রামের রাউজানে নিরুদ্দেশের আড়াই বছর পর বাড়ির পাশে পাওনাদারের বাড়ির শয়ন কক্ষ হতে খাটের উপর কাজী দিদারুল আলমর(৫২) নামের এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করেছেন রাউজান থানার পুলিশ। নিহতের স্বজনরা দাবী করেছেন পাওনাদাররা তাকে অপহরণ করে পাঁচদিন ঘরে বন্দি করে রেখে নির্যাতন করে হত্যা করেছেন। ১৬ মে মঙ্গলবার বিকাল ৫ টার দিকে রাউজান উপজেলার নোয়াপাড়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মোকামীপাড়া গ্রামের মৃত সায়ের আহমেদের পুত্র মো. ইউনুসের শয়ন কক্ষ হতে এই মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
নিহত কাজী দিদারুল আলম একই গ্রামের কাজী বাড়ির কাজী শামশুল আলমের ছেলে।
নিহতের পরিবারের সূত্রে জানা যায়, কাজী দিদারুল আলম দীর্ঘ সময় প্রবাসে ছিলেন। গত সাতবছর পূর্বে দেশে ফিরে শহরে বিভিন্ন ব্যবসা করতেন। এই সময় বেশ কয়েকজনের কাছ হতে চড়া সুদে ধার-দেনা করেন তিনি। নিহত কাজী দিদারুল আলম একপর্যায়ে ব্যবসায়ে লোকসানে পতিত হলে চক্রবৃদ্ধি সুদের কারণে দেনার পরিমাণ বেড়ে যায়। এতে করে ঋণদাতা ও পাওনাদাররা টাকার জন্য চাপ দিতে থাকেন। চাপের কারণে বিগত ২০২০ সালের নভেম্বরের দিকে পরিবার নিয়ে কাজী দিদারুল আলম নিরুদ্দেশ হয়ে যান। দীর্ঘ আড়াই বছর পর ১৬ মে মঙ্গলবার বাড়ির সন্নিকটে পাওনাদার মোহাম্মদ ইউনুসের শয়ন কক্ষ হতে পুলিশ তার মরদেহ উদ্ধার করেন। তার আগেই গত শনিবার কাজী দিদারুল আলমকে পাওনাদার একাট্টা হয়ে অপহরণ করে বাড়িতে নিয়ে বন্দি করে রেখে নির্যাতন করেছেন বলে অভিযোগ করেন নিহতের স্বজনরা।
নিহত ছোট ভাই কাজী ওয়াহিদুল আলম হত্যার অভিযোগ এনে বলেন, আমার ভাই পাওনাদারের চাপে ২০২০ সালের শেষে দিকে নিরুদ্দেশ হয়ে যায়। পরে পাওনাররা আমাদের বাড়িতে এসে নানান রকম হুমকি-ধমকি দিয়ে একেকসময় একেক অংকের টাকা পাবে বলে দাবী করেন। গত শনিবার তার সংঘবদ্ধ হয়ে আমার ভাইকে অপহরণ করে ইউনুস ড্রাইভারের বাড়িতে এনে বন্দি করে রাখেন।
ঘটনা সংঘটিত মো. ইউনুসের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বিছানা হতে প্রায় পাঁচ ফুট উপরে সিলিং ফ্যানে লুঙ্গির একটি অংশ ঝুলে আছে, আরেকটা অংশ নিহত কাজী দিদারুল আলমের গলায় পেছানো। বিছানা পাশে একটি চেয়ারের উপর বেশ কয়েকট সিগারেটের প্যাকেট পড়ে আছে। বাড়িতে ইউনুসের স্ত্রী শামসুর নাহার ছাড়া কাউকে পাওয়া যায় নি। তিনি বলেন, শনিবার তার স্বামী ইউনুসসহ কয়েকজন তাকে লুকিয়ে থাকা অবস্থায় ধরে নিয়ে আসেন। কেন ধরে এনেছে তা জানি না। আমাদের পাশের রুমে থাকতেন। একসাথে খাওয়া-দাওয়াও করতেন। আজ সকালে কয়েকবার চা-নাস্তা খেয়েছিলেন। দুপুরের ভাত খাওয়ার জন্য ডাকতে গেলে দেখি দরজা বন্ধ, কোন সাড়াশব্দ নেই। পরে আমার স্বামীকে বাইর হতে ফোন করে ডেকে এনে দরজার হুক ভেঙ্গে ঘরে প্রবেশ করে দেখি তিনি সিলিং ফ্যানের সাথে ঝুলে আছেন।
এ বিষয়ে রাউজান থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল হারুন জানান, আমরা মরদেহ উদ্ধার করেছি। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মর্গে প্রেরণ করা হবে। এই বিষয়ে নিহতের পরিবারের পক্ষ হতে মামলার প্রক্রিয়া চলছে। পরবর্তীতে তদন্তের সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
রাউজানে যুবকের আত্মহত্যা
রাউজান :: চট্টগ্রামের রাউজানে ফাঁসিতে ঝুলে মো. ইমতিয়াজ (২২) নামে এক যুবক আত্মহত্যা করেছে। সোমবার রাতে রাউজান সদর ইউনিয়নের ৮নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব রাউজান শমসের নগর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আত্মহননকারী ইমতিয়াজ ওই এলাকার ইমামুল হাশেমের পুত্র। নিহতের পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ইমতিয়াজ দীর্ঘদিন ধরে মানসিক রোগে আক্রান্ত ছিল। রাতে বাড়ির লোকজন ঘুমিয়ে পড়লে সেই সবার অজান্তে সিলিং ফ্যানের সাথে গলায় রশি পেচিয়ে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে।
রাউজান থানার ওসি আবদুল্লাহ আল হারুন বলেন, আত্মহননকারী ইমতিয়াজ মানসিক রোগী ছিলেন। একারণে ফ্যানের সাথে রশি দিয়ে ঝুলে আত্মহত্যা করেছিল। তার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে বলে তিনি জানান।