সোমবার ● ২৭ নভেম্বর ২০২৩
প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী » ইব্রাহিম একজন ঘৃণ্য ব্যক্তি ও পাহাড়িদের দুশমন, পাহাড়ি জনগণ তাকে কখনই ক্ষমা করবে না
ইব্রাহিম একজন ঘৃণ্য ব্যক্তি ও পাহাড়িদের দুশমন, পাহাড়ি জনগণ তাকে কখনই ক্ষমা করবে না
পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ এর কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক থুইলাপ্রু মারমা প্রেরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান,বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি)-এর তৃতীয় কেন্দ্রীয় বর্ধিত সভায় নেতৃবৃন্দ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা নিয়ে সৃষ্ট এক অচলাবস্থা ও সংকটময় পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে এর জন্য সরকারকে দায়ী করেছেন।
গত ২৫ নভেম্বর ২০২৩, শনিবার ঢাকায় এই বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় পিসিপি’র নেতৃবৃন্দ রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে অব্যাহত দমন-পীড়ন, ধরপাকড়, মিথ্যা মামলায় রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের হয়রানি এবং দেশে একশ্রেণীর নীতিহীন সুবিধাবাদী রাজনীতিবিদের বিরুদ্ধেও তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা জানান। তারা বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির সভাপতি তথাকথিত মুক্তিযোদ্ধা মুহাম্মদ ইব্রাহিমকে নিজ জন্মস্থান হাটহাজারি এলাকায় অবাঞ্ছিত ঘোষণা দেয়াকে যথার্থ বলে মন্তব্য করেন।
বর্ধিত সভায় বক্তব্য প্রদানকালে পিসিপি’র সভাপতি অঙ্কন চাকমা ও সাধারণ সম্পাদক অমল ত্রিপুরা বলেন, গণতন্ত্রের লেবাসধারী মুহাম্মদ ইব্রাহিম একজন আপাদমস্তক সুবিধাবাদী, নীতিভ্রষ্ট, বহুরূপী ডিগবাজিতে পারদর্শী ও জনগণের শত্রু। ‘মুক্তিযোদ্ধার’ নাম ভাঙিয়ে এতদিন তিনি বিভিন্ন টকশো, মিডিয়ায় ‘নিরাপত্তা বিশ্লেষক’ ‘গবেষক’–ইত্যাদি নানা তকমা লাগিয়ে তিনি লোকজনকে বিভ্রান্ত করে এসেছেন। আত্মকাহিনীর ফিরিস্তি দিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের আন্দোলন সংগ্রাম সম্পর্কে নিম্নমানের ও বিতর্কিত পুস্তিকাও তিনি রচনা করেছেন। কিন্তু সারা জীবন ছদ্মবেশ ধরে চলা যায় না, শেষ বেলায় তার মুখোশ খুলে পড়েছে।
হাটাজারিবাসীর চাইতেও ইব্রাহিমের ওপর পাহাড়ি জনগণ শত গুণ বীতশ্রদ্ধ ও ক্ষুব্ধ মন্তব্য করে পিসিপি’র নেতৃবৃন্দ বলেন, ইব্রাহিম একজন ঘৃণ্য ব্যক্তি ও পাহাড়িদের দুশমন, পাহাড়ি জনগণ তাকে কখনই ক্ষমা করবে না। পাহাড়ে রঙ-বেরঙের দালালদের উৎপাত সম্পর্কে ইঙ্গিত করে পিসিপি নেতৃদ্বয় তাদেরও দিন ঘনিয়ে আসছে বলে মন্তব্য করেন।
সভায় পিসিপি’র নেতৃবৃন্দ পার্বত্য চট্টগ্রামে ‘গুচ্ছাগ্রাম, শান্তিগ্রাম, বড়গ্রাম’ ইত্যাদি সেনা কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পের দুঃসহ অধ্যায়ের স্মৃতিচারণ করে আরও বলেন, খাগড়াছড়িতে ব্রিগেড কমান্ডার থাকাকালে ইব্রাহিমের হাতে অনেকে অপদস্থ, দীঘিনালা-পানছড়ি-ফেনি-মাটিরাঙ্গায় লোকজন ভিটেছাড়া, আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত সর্বস্বান্ত হয়ে অর্ধালক্ষাধিক লোক ত্রিপুরায় শরণার্থী হন এবং শত শত পরিবার নিজ বাস্তুভিটা থেকে উৎখাত হয়ে আভ্যন্তরীণভাবে শরণার্থী হয়ে পড়েন। অগণিত নিরপরাধ লোক সেনা কর্তৃক শারীরিকভাবে নির্যাতিত ও নিগৃহীত হয়েছেন।
উল্লেখ করা যেতে পারে, আশির দশকের শেষ দিকে ১৯৮৭-১৯৮৯ সালে খাগড়াছড়িতে সেনা রিজিয়ন কমান্ডার (২০৩ পদাতিক ব্রিগেড) থাকাকালে জালিম প্রকৃতির ইব্রাহিমের হাতে নিরীহ জনসাধারণ যারপরনাই নিগৃহীত হয়েছেন। পাহাড়ি সমাজে ভাঙ্গন ধরিয়ে সে সময়ে ইব্রাহিম এক অরাজক অবস্থা সৃষ্টি করেন। পাহাড়িদের মধ্যকার বিতর্কিত ব্যক্তিদের আর্থিক সুবিধে দিয়ে তিনি দালাল তৈরি করেন। তার প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে গণধিকৃত সমীরণ দেওয়ানসহ সে সময় একগুচ্ছ দালাল সেনাবাহিনী ও সরকারের চর ও লেজুড় হিসেবে সমাজে উৎপাত চালায়, যা বর্তমান আওয়ামী সরকারের আমলে আরও তীব্র রূপ ধারণ করেছে। ছাত্রসমাজেও ভাঙ্গন ধরাতে ধুরন্ধর ইব্রাহিম সুযোগসন্ধানী ছাত্রবেশী একশ্রেণীর দুর্বৃত্তকে মাসোহারা দিয়ে চর নিযুক্ত করেন, যার পরিণতিতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯৮৮ সালের দিকে সেনা মদদে একটি সরকারপন্থী চক্র গড়ে ওঠে। পরবর্তীতে এ প্রতিক্রিয়াশীল চক্রটি ছাত্রআন্দোলনেও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে, যার রেশ এখনও কেটে যায়নি।
নিরাপত্তার দোহাই দিয়ে ইব্রাহিমের সময়ে খাগড়াছড়ি-পানছড়ি সড়কের শত বছরের প্রাচীন বৃক্ষরাজি কেটে ধ্বংস করে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতিসাধন করা হয়। খাগড়াছড়ি থেকে বদলী হয়ে আসার পথে হাটাজারি ফরেস্ট চৌকিতে ইব্রাহিমের গাড়ির বহরের অবৈধ কাঠ নিয়ে কথা ওঠে, ক্ষমতার জোরে তিনি সে সময় সব কিছু জায়েজ করেন।