রবিবার ● ৩ ডিসেম্বর ২০২৩
প্রথম পাতা » অপরাধ » দুর্নীতির দায়ে রাঙামাটি জেলা ও দায়রা জজ আদালতের কামরুলকে পঞ্চগড়ে বদলী
দুর্নীতির দায়ে রাঙামাটি জেলা ও দায়রা জজ আদালতের কামরুলকে পঞ্চগড়ে বদলী
স্টাফ রিপোর্টার :: মাননীয় প্রধান বিচারপতি বাংলাদেশ সুপ্রীমকোর্ট ও হাইকোর্ট বিভাগ, ঢাকা, বাংলাদেশ বরাবর রাঙামাটি পার্বত্য জেলা ও দায়রা জজ আদালতের নকল খানায় নিয়োজিত প্রধান তুলনাকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর জেলা জজ আদালতের পেশকার হিসাবে নিয়োজিত কামরুল হাসান এর বিরুদ্ধে ঘুষ, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার সংক্রান্ত আবেদন প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সুপ্রীমকোর্ট ও হাইকোর্ট বিভাগ, ঢাকা আবেদনকারীদের আবেদন আমলে নিয়ে তদন্ত পূর্ব্বক বাংলাদেশ সুপ্রীমকোর্ট ও হাইকোর্ট বিভাগ এর প্রশাসন ও বিচার বিভাগের ডেপুটি রেজিস্ট্রার মো. মিজানুর রহমান এর আদেশক্রমে সহকারি রেজিস্ট্রার (বিচার) রাশেদুর রহমান স্বাক্ষরিত (বিজ্ঞপ্তি নং-২১২ জে, তারিখ-২৮/১১/২০২৩ ইংরেজি) প্রশাসনিক কারণে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা ও দায়রা জজ আদালতের তুলনা সহকারি কামরুল হাসানকে আন্তঃ জেলা পঞ্চগড় বদলী করা হয়।
রাঙামাটি জেলা ও দায়রা জজ কোর্টের এড. আবদুল গফুর বাদশা, এড. রাশেদ ইকবাল বাবু, বেঞ্চ সহকারী প্রশাদের চাকমা, জারীকারক তাজিম উদ্দিন, এডভোকেট ক্লার্ক আবদুল কাদের ও ইসরাফিল প্রমূখ মাননীয় প্রধান বিচারপতি বরাবর কামরুল হাসানের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন।
অভিযোগ সূত্রে জানাযায়, অভিযুক্ত কামরুল হাসান রাঙামাটি পার্বত্য জেলা ও দায়রা জজ আদালতের প্রধান তুলনা সহকারী ভারপ্রাপ্ত বেঞ্চ সহকারী হিসাবে দায়িত্ব পালন করে তিনি বিচারপ্রার্থী ও বিচার প্রক্রিয়ার সাথে জড়িত অনেকের কাছে নিজেকে পেশকার এবং কারো কাছে জেলা জজ আদালতের নাজির হিসাবে পরিচয় দেন। তিনি রাঙামাটি জেলা ও দায়রা জজ আদালতের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসাবে মামলার কার্যক্রম সম্পর্কে মোটা অংকের ঘোষ লেনদেন করে থাকে। জেলা জজ আদালতের গেইট এর সামনে দরবার হোটেল এর মালিক মো. নাছির উদ্দিন এর মাধ্যমে হত্যা মামলা, চাঁদাবাজী, মাদক এর মামলার বড় ধরনের আর্থিক লেনদেন করেন এবং মামলা নিষ্পত্তি করে দেওয়ার আশ্বস্ত করেন। তিনি উক্ত আদালতে সুদীর্ঘ ১৫ বৎসর এর অধিক সময় যাবৎ দায়িত্ব পালন করার কারণে আদালতের গুরুত্বপূর্ণ বিচারক/ব্যক্তিদের ঘুষ এর টাকা দিয়া উপহার সামগ্রী ক্রয় করে দেন এবং কাপ্তাই লেক হইতে ১০/১২ কেজি ওজনের মাছ আনিয়া তাহার কাছের লোক দিয়া বাসায় পৌঁছাইয়া দেয়। তাছাড়া তিনি যে সমস্ত দুর্নীতি ও বেআইনী কাজের সহিত জড়িত আছেন তাহার অপরাধের ফিরিস্তি নিম্নে পয়েন্ট আকারে বর্ণনা
করা হলো।
মোকদ্দমার সহি মোহরকৃত নকল / সার্টিফাইড কপি নিতে গেলে কামরুল হাসান এর সাথে পূর্বে কথা বলে মোটা অংকের টাকা দিয়ে অনুমোদন করাতে হয় নতুবা তিনি নকল না দিয়া বিচারপ্রার্থীদের হয়রানী করেন।
নকল শাখায় কর্মরত অফিস সহায়ক জুনায়েদ এর মাধ্যমে টাকা গ্রহণ করাইয়া কামরুল হাসান এর সাথে চুক্তিকৃত মামলার সহি মোহরকৃত নকল ব্যক্তিগত ডায়েরীতে নোট নিয়া নকল সরবরাহ করিয়া থাকে। কেহ টাকা না দিলে তাহাকে নকল দেয় না। বিচার বিভাগের সকল কর্মকর্তা কর্মচারীগণ উক্ত বিষয়ে অবগত থাকিলেও কেহ তাহার ভয়ে মুখ খুলতে চায় না। তাছাড়া জজ সাহেব তাহার পক্ষের লোক হওয়ায় কেহ সাহস করে কোন বিষয়ে কিছু বলতে রাজি হয় না।
অফিস স্টাফগণ তাহার অন্যায়ের বিরুদ্ধে কোন প্রকার কথা বলার সাহস পায় না। সে সকলকে প্রকাশ্যে বলে যে, তাহার অনুমতি ছাড়া আদালতের কোন স্টাফ কোন কাজ করতে পারবে না। কামরুল হাসান এর আপন শ্যালক আরিফুল ইসলাম একজন পাবলিক এবং কোন চাকুরী না করা স্বত্ত্বেও তিনি যুগ্ম জেলা জজ আদালতের স্টেনো হিসাবে কাজে যোগদান করিয়াছেন। বদলীকৃত যুগ্ম জেলা জজ আদালতের জজ মিল্টন সাহেব এর মাধ্যমে বড় বড় মামলা ডিলিংস করে শ্যালক ও ভগ্নিপতি মিলে রায় লিখিয়া দিয়া উক্ত রায় তাহার মাধ্যমে প্রচার করাইয়া মোটা অংকের আর্থিক ঘুষ লেনদেন করেন। যাহা আদালতের সকলে জানে। কামরুল হাসান এর প্রভাবে আরিফুল ইসলাম এর জঘন্য কাজে কেহ কিছু বলে না।
কামরুল হাসান এর বাড়ী চট্টগ্রাম জেলার বোয়ালখালী থানা এলাকায় হওয়ার কারণে তিনি মামলার কথা বলে বিভিন্ন লোক এর সাথে চুক্তি করে এবং চুক্তি মোতাবেক মোটা অংকের ঘুষ লেনদেন করেন। কামরুল হাসান এর শ্যালক আরিফুল ইসলাম সরকারীভাবে কোন নিয়োগ প্রাপ্ত লোক নহে। আরিফুল ইসলাম শুধুমাত্র কামরুল হাসান এর কারণে দাপটের সাথে কর্ম করিয়া আসিতেছে এবং স্টেনো হিসাবে দায়িত্বপালন কালে মামলার রায় লিখিয়া দেয়।
কামরুল হাসান জেলা ও দায়রা জজ এর মাধ্যমে আরিফুল ইসলাম জেলা জজ আদালতের সাটলিপি কারক পদে নিয়োগ এর সম্পূর্ণ ব্যবস্থা করিয়াছে মর্মে মিষ্টি বিতরণ করিয়াছে এবং উক্ত নিয়োগে এর জন্য জেলা জজ সাহেব এর সাথে কথা কনফার্ম হইয়াছে মর্মে বলাবলি করিতেছে। নিয়োগ পরীক্ষা আগামী নভেম্বর বা ডিসেম্বরে চূড়ান্তভাবে সম্পন্ন হইবে এবং খুব দ্রুত ১নং ব্যক্তি হিসাবে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিয়োগপ্রাপ্ত হইবে।
কামরুল হাসান এর নিজ বাড়ী চট্টগ্রাম বোয়ালখালীতে তিনি নামে বেনামে বহু জায়গা জমি ক্রয় করিয়াছে এবং স্ত্রী, শ্বশুড়, শ্যালক, বোন, ভগ্নিপতির নামে বহু ব্যাংক ব্যালেন্স রহিয়াছে এবং কামরুল হাসান এর নিজ বাড়ীতে একটি বড় গরুর খামার রহিয়াছে এবং চট্টগ্রামের চাঁন্দগাঁও আবাসিক এলাকায় নিজ নামে একটি ফ্ল্যাট বাড়ী ক্রয় করিয়া বসবাস করিতেছে।
চট্টগ্রামে ১কোটি ৯৩ লক্ষ টাকা দিয়া তাহার বন্ধু নাছির সহ কয়েকজন ব্যবসায়ী মিলে জায়গা জমি ডেভেলপার ব্যবসার সাথে জড়িত আছে।
কামরুল হাসান সোনালী ব্যাংক ও ইসলামী ব্যাংকে স্ত্রীর নামে আর্থিক লেনদেন করেন।
কামরুল হাসান এর স্ত্রী সরকারী প্রাইমারী স্কুলে সহকারী শিক্ষক পদে চাকুরী করেন। তাহার স্ত্রীর একটি লাল রং এর ক্রয়কৃত ব্যক্তিগত প্রিমিয়াম গাড়ী নিয়া যাতায়াত করেন।
রাঙামাটিতে শীর্ষ ইয়াবা কারবারী মো. বাদশা মিয়া যাহার নামে ৫০/৫৫টি মামলা রহিয়াছে ও তাহার ছেলে নুরুল আলম এর নামে ১১টি মামলা রহিয়াছে। উক্ত নুরুল আলম বর্ণিত কামরুল হাসান এর ব্যক্তিগত ড্রাইভার হিসাবে নিয়োজিত আছে। প্রশাসন ও আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে দিব্যি ড্রাইভার ও তাহার পিতা মো. বাদশা মিয়াকে মাদক ব্যবসায় সহযোগিতা করেন। কামরুল হাসান এর ব্যক্তিগত ক্রয়কৃত গাড়ীর রেজি: নং- ঢাকা মেট্রো-গ-১৪-৯৩১৬। যাহা প্রতিনিয়ত কোর্ট অঙ্গনে পার্কিং করা থাকে। এছাড়াও রিজার্ভ বাজার এলাকার যত মাদক ব্যবসায়ী আছে সকলের সাথে মাদক ব্যবসায়ী ফোরকান এর মাধ্যমে উক্ত কামরুল হাসান লেনদেন করেন। এছাড়া নারী ও শিশু নির্যাতন আদালতের বেঞ্চ সহকারী জহির এর নিকট হইতে ৫০ হাজার টাকা মামলার তদবির এর জন্য গ্রহণ করেন । গত কোরবানীর ঈদে ১১টি গরু যাহার বর্তমান মূল্য ২৬ লক্ষ টাকা হইবে ভারত হইতে অবৈধ উপায়ে আনার পথে কাপ্তাই বিজিবি ব্যাটালিয়ন এর নিকট ধরা পরে। পরবর্তীতে উক্ত গরু গুলো রাষ্ট্রীয় ভাবে নিলামে বিক্রয় করে, বিক্রয়কৃত টাকা সরকারী কোষাগারে জমা রাখেন। এই বিষয়ে কাপ্তাই বিজিবি ব্যাটালিয়নের সিও সাহেবকে রাঙামাটি জেলার অতিরিক্ত জেলা জজ সাহেব এর মাধ্যমে সিও সাহেব মোবাইলে ফোনে গরু গুলো কামরুল হাসানকে দিয়া দেওয়ার জন্য তদবীর করাইয়ালেও, উক্ত গরু গুলো কামরুল হাসানকে দেয় নাই।