রবিবার ● ২৮ এপ্রিল ২০২৪
প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী » কুষ্টিয়ায় তীব্র গরমে হিট স্ট্রোকে মারা যাচ্ছে মুরগী : ৬০ ভাগ খামার বন্দ
কুষ্টিয়ায় তীব্র গরমে হিট স্ট্রোকে মারা যাচ্ছে মুরগী : ৬০ ভাগ খামার বন্দ
কে এম শাহীন রেজা, কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি :: কুষ্টিয়ায় চলছে টানা তীব্র তাপপ্রবাহ। তাপমাত্রা গিয়ে ঠেকেছে ৪১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। তীব্র তাপপ্রবাহের কারনে মারা যাচ্ছে মুরগী, যে কারনে বিপাকে পড়েছে খামারীরা। খাবার ও বাচ্চার বর্ধিত দাম নিয়ে সংকটে থাকা মুরগীর খামারিরা এবার গরমে চরম বেকায়দায় পড়েছেন। টানা তীব্র তাপপ্রবাহের মধ্যে পানি স্প্রে করাসহ মুরগী বাঁচিয়ে রাখতে নানান চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। এ পরিস্থিতিতে মুরগীর খামারের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়ছে। কুষ্টিয়া সদরের পোল্ট্রি খামারি নয়ন মন্ডল বলেন, খামারে হিট স্ট্রোক করে প্রতিদিনই মুরগী মারা যাচ্ছে। বিদ্যুৎ চলে গেলে মুরগীর মৃত্যুহার বেশি হচ্ছে। মুরগী বাড়ছে কম, ডিমও দিচ্ছে কম। এই গরমের মধ্যে একটি মুরগী তিন কেজি ফিড খেয়ে ১ কেজি ৮শ’ গ্রাম হচ্ছে।
খামারি জামাল উদ্দিন মিলন বলেন, খামারে হিট স্ট্রোক ছাড়াও মুরগী অনেক রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। রানীক্ষেতের মতো রোগও হচ্ছে। প্রান্তিক খামারিরা লোকসানের মুখে পড়ছে। বেলা ১১টা থেকে তাপমাত্রা বাড়তে থাকছে, ৩টা-৪টা বাজলে আর ঠেকানো যাচ্ছে না। পানি দিয়ে স্প্রে করে মুরগীর মৃত্যু ঠেকানো যাচ্ছে না। মুরগী ছোট থাকতেই বিক্রি করে দিচ্ছে খামারিরা। এ কারণে বাজারে দামও পাচ্ছেনা তারা। একেকটি শেডে ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা লোকসান হয়ে যাচ্ছে। এ কারণে আমরা সবাই বিক্রি করে দিতে চাচ্ছি। মুরগীর উৎপাদনে আগামীতে চরম বিপর্যয় ঘটার আশঙ্কা করছেন চাষীরা। নিশ্চিত লোকসানের মুখে পড়ছেন তারা।
কুষ্টিয়া জেলা পোল্ট্রি খামার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম বাবু বলেন, এরমধ্যে কুষ্টিয়ার প্রায় ৬০ ভাগ খামার বন্ধ হয়ে গেছে। খাবার, বাচ্চা ও ঔষধের মূল্যবৃদ্ধির পাশাপাশি এখন তীব্র গরমে পোল্ট্রি খামারে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। তিনি বলেন, ভূগর্ভ থেকে পানি তুলে যে স্প্রে করবে খামারিরা সেই পানিও পাচ্ছে না। পানির স্তরও নিচে নেমে গেছে। খামারিরা দ্রুত বিক্রি করে শেড খালি করে দিতে চাচ্ছে। এতে আগামী মে-জুন মাসে মারাত্মক সংকট সৃষ্টি হতে পারে। এখন থেকে উদ্যোগ না নিলে এই খাত ধ্বংস হয়ে যাবে। দাম নিয়ে চিন্তা না করে উৎপাদন নিয়ে ভাবার কথা বলেন তিনি। তিনি আরো বলেন, উৎপাদন না হলে বাজারের দাম কতো হলো তা নিয়ে চিন্তা করার সুযোগ থাকবে না। তিনি প্রান্তিক খামারিদের প্রণোদনা দেয়ার দাবি জানান। না হলে আমিষের ঘাটতি দেখা দেবে বলে মত দেন তিনি।
কুষ্টিয়া জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আল মামুন হোসেন মণ্ডল বিষয়টি নিয়ে গাঁ এ্যাড়া দিয়ে বলেন, এ সমস্যাতো এতো জটিল নয়। খামারে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখার উপায় আছে, তাপমাত্রা নির্দিষ্ট মাত্রায় রাখতে হবে, হিট বেশি হলে মুরগী মারা যাবে এটি স্বাভাবিক, তাই পরামর্শ দেয়া হচ্ছে কীভাবে খামারের তাপমাত্রা কমাতে হবে। তিনি বলেন, উপরের শেডে ঠাণ্ডা পানি ছিটাতে হবে। টিনের নিচে সিলিং দিতে হবে। মুরগীকে স্যালাইন খাওয়াতে হবে। ফ্যান দিয়ে বেশি করে বাতাস দিতে হবে।