রবিবার ● ২৪ জুলাই ২০২২
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » ২০ জুলাই উত্থাপিত প্রশ্নের উত্তর দিতে সন্তু লারমার প্রতি আহ্বান
২০ জুলাই উত্থাপিত প্রশ্নের উত্তর দিতে সন্তু লারমার প্রতি আহ্বান
সংবাদ বিজ্ঞপ্তি :: হিল উইমেন্স ফেডারেশন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এন্টি চাকমা প্রেরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান,
গত ২০ জুলাই ২০২২ আঞ্চলিক পরিষদ কার্যালয়ের সম্মুখে এক মানববন্ধনে প্রদর্শিত ব্যানার-প্ল্যাকার্ড ও উত্থাপিত প্রশ্নের যথাযথ জবাব না দিয়ে সরকারের কাছে নিরাপত্তা চেয়ে গতকাল পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি ও এ সমিতিভুক্ত কতিপয় সংগঠন মনগড়া, কাল্পনিক ও বিভ্রান্তিকর বিষয় অবতারণা করে যে সাজানো বিবৃতি দিয়েছে, তা হিল উইমেন্স ফেডারেশন ও পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘের ক্রোধ ও ঘৃণা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে বলে তারা (দুই নারী সংগঠন) এক পাল্টা বিবৃতিতে জানিয়েছে।
গতকাল ২৩ জুলাই ২০২২, শনিবার সংবাদ মাধ্যমে দেয়া এক যৌথ বিবৃতিতে হিল উইমেন্স ফেডারেশনের-এর সভাপতি নীতি চাকমা ও পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘের সভাপতি কণিকা দেওয়ান পিসিজেএসএস কর্তৃক ‘বক্তব্য প্রত্যাহারের’ দাবি নাকচ করে দিয়ে বলেছেন, ‘২০ জুলাই আঞ্চলিক পরিষদ কার্যালয়ের সম্মুখে উত্থাপিত প্রশ্ন-বক্তব্য’ পার্বত্যবাসীর মনের কথার প্রতিধ্বনি, তাতে কোথাও কোন অসত্য ভাষণ ছিল না। গণতান্ত্রিক পন্থায় প্রতিবাদ বিক্ষোভ জানানোর সভ্য দুনিয়ার রীতি মেনে তা করা হয়েছে। তাকে “আক্রমণাত্মক, বিদ্বেষমূলক, উস্কানিমূলক, মানহানিকর ও রাজনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত” ইত্যাদি আখ্যায়িত করলে তাতে হিল উইমেন্স ফেডারেশন ও পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘ কর্তৃক উত্থাপিত প্রশ্ন মিথ্যা হয়ে যায় না। বরং বাগাড়ম্বর করে প্রকৃত সত্য আড়ালের ব্যর্থ অপচেষ্টার ফলে সন্তু লারমা ও তার অনুগত সংগঠনসমূহকে জনগণের কাছে আরও বেশি হেয়প্রতিপন্ন হতে হবে।
শান্তিপূর্ণ মানববন্ধনে ভীত সন্ত্রস্ত পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি ও তার অঙ্গ সংগঠনসমূহ যেভাবে সরকারের নিকট সন্তু লারমার “নিরাপত্তা জোরদারের” দাবি জানাচ্ছে, তাতে সন্তু লারমা কতটা গণবিচ্ছিন্ন তাই উন্মোচিত হলো বলে নারী নেত্রীদ্বয় মন্তব্য করেছেন।
জাতীয় অস্তিত্ব বিপন্ন করে শাসকগোষ্ঠীর পাতানো খেলায় শরীক হওয়ায় নিন্দা জানিয়ে নেত্রীদ্বয় বলেছেন, রাঙামাটিতে এপিবিএন সদর দপ্তর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ (২৬ মে ২০২২), চুক্তির দু’যুগপূর্তিতে রাঙামাটি স্টেডিয়ামে সেনা আয়োজিত কনসার্ট উপভোগ (২৪ ডিসেম্বর ২০২২), প্যারিসে শেখ হাসিনার ইউনেস্কো শান্তি পুরস্কারের (১৯৯৮) অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে সন্তু লারমা সরকারের আস্থাভাজন দালালে পরিণত হয়েছেন। নারী নেত্রীদ্বয় প্রকৃত গণরোষ শুরু হলে দালালরা পালানোর রাস্তা খুঁজে পাবে না বলেও মন্তব্য করেছেন। অন্যদের দালালি না করতে সতর্ক করে দিয়েছেন।
মিডিয়ায় দেয়া বিবৃতিতে পূর্ণস্বায়ত্তশাসনপন্থী দুই নারী সংগঠন রাঙামাটির সাবেক এসপি হুমায়ুন কবীরের ‘পার্বত্য চুক্তিকে মুলা’ (প্রথম আলো, ১৮ জুন ২০০৩) আর সন্তু লারমাকে ‘বুড়ো’ ‘আন্দোলন করবে না, এসি রুমে আছে’–ইত্যাদি আপত্তিকর অসম্মানজনক কথাবার্তা স্মরণ করে দিয়ে আরও বলেছে, পিসিজেএসএস আজ পর্যন্ত উক্ত এসপি’র সে বক্তব্যও মিথ্যা প্রমাণ করতে পারেনি।
বিবৃতিতে দুই নারী সংগঠন সন্তু লারমা কর্তৃক পূর্ণস্বায়ত্তশাসনপন্থী কর্মী-সমর্থকদের ‘গলা টিপে হত্যা’র নির্দেশ (যুগান্তর পত্রিকা, ১৩ নভেম্বর ২০০০) ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির চুক্তির পর অনুষ্ঠিত কংগ্রেসে গৃহীত ইউপিডিএফ’কে নির্মূলের ধ্বংসাত্মক কর্মসূচি গ্রহণের কথাও স্মরণ করে দিয়েছে।
সন্তু লারমার দিকে ইঙ্গিত করে দুই নারী সংগঠন বিবৃতিতে দাবি করেছে যে, অনেক ঘটনার যথেষ্ট তথ্য প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও ‘মানহানিকর অসম্মানজনক’ কোন বক্তব্য মানববন্ধনে দেয়া হয়নি এবং সকল কথাবার্তা রাজনৈতিক বিষয়ের গণ্ডীতে সীমাবদ্ধ ছিল। জাতীয় স্বার্থ বিরোধী কর্মকাণ্ড থেকে বিরত না হলে, দুই নারী সংগঠন অন্যান্য বিষয়েও মুখ খুলতে বাধ্য হবে বলে সতর্ক করে দিয়েছে।
হিল উইমেন্স ফেডারেশন ও পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘ বিবৃতিতে পাহাড়ে প্রতিনিয়ত ভূমি বেদখল, বাড়িঘরে হামলা-অগ্নিসংযোগ, মামলা-হয়রানি, অন্যায় ধরপাকড়, নারী নির্যাতনে নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করে সাজানো বিবৃতিতে যুক্ত হবার জন্য নাম সর্বস্ব সংগঠনেরও সমালোচনা করেছে।
সন্তু লারমাকে ‘২০ জুলাই উত্থাপিত প্রশ্নের’ জবাব দিয়ে ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত বন্ধ করে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে সামিল হতে আহ্বান জানিয়েছে হিল উইমেন্স ফেডারেশন ও পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘ। অন্যথায় তারা আরও কঠোর কর্মসূচি নিতে বাধ্য হবে বলে হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করেছে।