সোমবার ● ১২ সেপ্টেম্বর ২০২২
প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী » ঝিনাইদহ পৌরসভায় ব্যাপক ভোটের ব্যাবধানে নৌকার ভরাডুবি
ঝিনাইদহ পৌরসভায় ব্যাপক ভোটের ব্যাবধানে নৌকার ভরাডুবি
জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :: টান টান উত্তেজনা ও ইভিএম নিয়ে নানা সন্দেহ সংশয়ের মধ্যে সাড়ে ১১ বছর পর অনুষ্ঠিত ঝিনাইদহ পৌরসভা নির্বাচনে নৌকা প্রার্থীর শোচনীয় পরাজয় ঘটেছে। প্রায় ৮ হাজারের বেশি ভোটের ব্যাবধানে আওয়ামীলীগের প্রার্থীকে হারিয়ে ঝিনাইদহ পৌরসভার নগর পিতা হলেন জাহেদী পরিবারের সদস্য কাইয়ুম শহরিয়ার জাহেদী হিজল। তিনি নারিকেল গাছ প্রতিক নিয়ে ৪৭টি ভোট কেন্দ্রে ২৫ হাজার ৭’শ ৫৩ ভোট পেয়ে বেসরকারী ভাবে নির্বাচিত হন। তার নিকটমত প্রতিদ্বন্দি শাসকদল আওয়ামীলীগের বর্ষিয়ান নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল খালেক পেয়েছেন ১৮ হাজার ৫৩৯ ভোট। এছাড়া মিজানুর রহমান মাসুম মোবাইল প্রতিক নিয়ে ৩ হাজার ৬৬২ ও সিরাজুল ইসলাম হাতপাখা নিয়ে ৯৩৮ ভোট পেয়েছেন। মোট ৮২ হাজার ৬৯৫ জন ভোটারের মধ্যে ভোটাধিকারকৃত বৈধ ভোটের সংখ্যা ছিল ৪৮ হাজার ৮১২ ভোট। আর বাতিলকৃত ভোটের সংখ্যা ছিল ১৩৪টি। রোববার সকাল ৮টায় ঝিনাইদহ পৌরসভায় ইভিএম পদ্ধতি ভোট গ্রহন শুরু হয়। বেলা ১১টার দিকে নৌকার সমর্থকরা স্বতন্ত্র প্রার্থীর বেশ কয়েটি ট্রেন্ড ভাংচুর করে বলে অভিযোগ। এছাড়া শহরের বিভিন্ন কেন্দ্রে উত্তেজনা পরিবশে সৃষ্টি হলে বিজিবি, পুলিশ ও র্যাব তাৎক্ষনিক ভাবে ব্যবস্থা গ্রহন করে। ফলে বড় কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই সুষ্ঠ পরিবেশে ভোট গ্রহন সম্পন্ন হয়। দিনব্যাপী বৃষ্টির বাগড়ার মধ্যে ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে এসে ভোট দিতে দেখা যায়। রাতে ফলাফল ঘোষনার পরপরই বিভিন্ন পাড়া মহল্লায় নারিকেল গাছ প্রতিকের সমর্থকরা আনন্দ উল্লাসে ফেটে পড়ে। জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আব্দুস ছালেক জানান, ঝিনাইদহ পৌরসভায় মোট ভোটার ৮২ হাজার ৬৯৫ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৪০ হাজার ৪৪৬ জন ও নারী ভোটার ৪২ হাজার ২৪৯ জন। ইভিএমে ভোট গ্রহণের জন্য ৪৭টি কেন্দ্র্র ও ২৬৫টি বুথে ভোট গ্রহন করা হয়। নির্বাচনে মেয়র পদে ৪ প্রার্থী ছাড়াও সাধরণ কাউন্সিলর পদে ৬৪ জন ও সংরক্ষিত নারী আসনের কাউন্সিলর পদে ১৯ জন প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন। নির্বাচনের পরিবেশ সুষ্ঠু রাখতে ১৮ জন নির্বাহী ও ৩ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোতায়েন করা হয়। এছাড়াও ৩’শ ৫৫ জন পুলিশ ও ৮’শ ১ জন আনসার নিয়োজিত ছিলেন।
ঝিনাইদহ পৌরসভায় নির্বাচিত কাউন্সিলর হলেন যারা
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহ পৌরসভার কাউন্সিলর পদে নির্বাচনে কেবল সাবেক দুই কাউন্সিলর তাদের জয়ের ধারা ধরে রাখতে পেরেছেন। এরা হলেন ৫ নং ওয়ার্ডে টানা ছয়বার জয়ী হয়ে রেকর্ড সৃষ্টিকারী সাবেক ফুটবলার সাইফুল ইসলাম মধু ও ৬ নং ওয়ার্ডে মহিউদ্দীন মহি। এছাড়া বাকী ৭টি ওয়ার্ডে নতুন মুখ বিজয়ী হয়েছে। বেসরকারী ফলাফলে বিজয়ীদের মধ্যে রয়েছেন ১ নং ওয়ার্ডে টিপু সুলতান, ২ নং ওয়ার্ডে মোঃ আবু বক্কার, ৩ নং ওয়ার্ডে আলাউদ্দীন জোয়ারদার লাড্ডু, ৪ নং ওয়ার্ডে শামসিল আরেফিন কায়সার, ৫ নং ওয়ার্ডে সাইফুল ইসলাম মধু, ৬ নং ওয়ার্ডে লিয়াকত হোসেন, ৭ নং ওয়ার্ডে মহিউদ্দীন, ৮ নং ওয়ার্ডে সাদেক আলী ও ৯ নং ওয়ার্ডে রেজাউল করিম রেজা। এছাড়া মহিলা কাউন্সিলর পদে সাবেক কাউন্সিলর ফারহানা রেজা আনজু, বুলবুলি বেগম ও সুফিয়া বেগম নির্বাচিত হন।
নজীরবিহীন নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে ঝিনাইদহ পৌরসভা নির্বোচন শান্তিপুর্ন ভাবে সুসম্পন্ন
ঝিনাইদহ :: কিছু বিচ্ছন্ন ঘটনা ছাড়া কঠোর ও নজীরবিহীন নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে ঝিনাইদহ পৌরসভা নির্বোচন শান্তিপুর্ন ভাবে শেষ হয়েছে। সকাল থেকে প্রতিটি ভোটকেন্দ্র ব্যাপক উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দুর্যোগপুর্ন আবহাওয়া ভোট উৎসবে বাগড়া দেয়। ফলে ঘন্টা দুয়েক ছন্দ পতন ঘটে। অনেকে বৃষ্টি ভিজে ভোট দিতে দেখা গেছে। ইভিএম পদ্ধতি ভোট হওয়ায় ঝিনাইদ শহরের মানুষ এক নতুন অভিজ্ঞতার সম্মুখি হয়। প্রকমে ইভিএম নিয়ে ভোটারদের মাঝে সন্দেহ থাকলেও ভোট প্রদানের পর সেই ঘোর কেটে যায়। বেবি খাতুন ও হেনা বেগম নামে দুই ভোটার জানান, ইভিএমে তাদের ভোট দিতে কষ্ট হয়নি। সংশ্লিষ্ট নির্বাচন কর্মকর্তারা ইভিএম বুঝিয়ে দিলে সে মোতাবেক তারা পচ্ছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেন। এদিকে ভোটকেন্দ্রগুলো পরিদর্শন করে দেখা গেছে ভিতরে বাইরে নজীরবিহীন নিরাপত্তা ছিল। বিজিবি, পুলিশ, র্যাব ও আনসার সদস্যের পাশাপাশি সাদা পোশাকে গোয়েন্দারা টহলে ছিল। ভোট দিয়ে এসে ভোটারা জানান, রুমে রুমে অনেক প্রার্থীর এজেন্ট না থাকলেও কারচুপির কোন সুযোগ ছিল না। নিজের পচ্ছন্দের প্রতিকে ভোট দিতে পেরেছেন। উল্লেখ্য প্রায় সাড়ে ১১ বছর পর চলতি বছরের গত ১৫ জুন এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও এক স্বতন্ত্র প্রার্থীর উপর হামলার অভিযোগে নৌকা প্রার্থীর প্রার্থীতা বাতিল করে নির্বাচন কমিশন। দীর্ঘ আইনী জটিলতা কাটিয়ে শেষে উচ্চ আদালত দ্রুত নির্বাচন করার নির্দেশ দিলে নির্বাচন কমিশন ১১ সেপ্টম্বর ভোট গ্রহনের দিন ধার্য্য করে। নির্বাচনে মোট চারজন প্রার্থী মেয়রপদে প্রতিদ্বন্দিতা করেন। এরা হলেন নৌকার প্রার্থী আব্দুল খালেক, স্বতন্ত্র প্রার্থী কাইয়ুম শাহরিয়ার জাহেদী হিজল (নারিকেল গাছ), মিজানুর রহমান মাসুম (মোবাইল প্রতিক) ও ইশা আন্দোলনের মাওলানা সিরাজুল ইসলামের হাত পাখা। জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আব্দুস ছালেক জানান, ঝিনাইদহ পৌরসভায় মোট ভোটার ৮২ হাজার ৬৯৫ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৪০ হাজার ৪৪৬ জন ও নারী ভোটার ৪২ হাজার ২৪৯ জন। ইভিএমে ভোট গ্রহণের জন্য ৪৭টি কেন্দ্র্র ও ২৬৫টি বুথে ভোট গ্রহন করা হয়। নির্বাচনে মেয়র পদে ৪ প্রার্থী ছাড়াও সাধরণ কাউন্সিলর পদে ৬৪ জন ও সংরক্ষিত নারী আসনের কাউন্সিলর পদে ১৯ জন প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন। নির্বাচনের পরিবেশ সুষ্ঠু রাখতে ১৮ জন নির্বাহী ও ৩ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোতায়েন করা হয়। এছাড়াও ৩’শ ৫৫ জন পুলিশ ও ৮’শ ১ জন আনসার নিয়োজিত ছিলেন। জেলা নির্বাচন অফিসার আব্দুস ছালেক সুষ্ঠ ভাবে ভোট সম্পন্ন করায় সন্তোষ প্রকাশ করেন।
মহেশপুরে ভাইয়ের মৃত্যুর খবর শুনে হার্ট এ্যটাকে বোনেরও মৃত্যু
ঝিনাইদহ :: ভাইয়ের মৃত্যু খবর শুনে বোনও ঢলে পড়লো মৃত্যুরকোলে। ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার ভালাইপুর গ্রামে। শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে ভাইয়ের মৃত্যুর খবর পান মহেশপুর উপজেলার ভালাইপুর গ্রামের শামছুল ইসলামের স্ত্রী রশিদা খাতুন। তার ভাই যশোরের চৌগাছা উপজেলার চাঁনপাড়া গ্রামের ফসিয়ার রহমান হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। খবরটি মুঠোফোনে শোনা মাত্রই রশিদা খাতুন জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। দ্রুত তাকে মহেশপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষনা করেন। রোববার বেলা ১১টার দিকে ভাই ফসিয়ার রহমানের দাফন সম্পন্ন হয় নিজ গ্রামে। অন্যদিকে ভাইয়ের দাফনের তিন ঘন্টা পর বোন রশিদার দাফন হয় মহেশপুর উপজেলার ভালাইপুর গ্রামের পারিবারিক গোরস্থানে। কয়েক ঘন্টার ব্যবধানে ভাই ও বোনের মৃত্যুতে দুই পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। খবরটির সত্যতা নিশ্চত করেছেন স্থানীয় এসবিকে ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বর বাবলুর রহমান।
ঝিনাইদহ থেকে রাজবাড়ি জেলার ধর্ষন ও অপহরণ মামলার আসামী র্যাব-৬’র হাতে গ্রেফতার
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ডাকবাংলা এলাকা থেকে অপহরণ ও ধর্ষন মামলার আসামী বিপ্লব হোসেন (২২) কে আটক করেছে র্যাব। আটক বিপ্লব রাজবাড়ি জেলার বানিয়াকান্দি এলাকার বাসিন্দা বলে জানা গেছে। রোববার ঝিনাইদহ র্যাব-৬ এর এক খবর বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিপ্লব বানিয়াকান্দি এলাকায়বসবাসের সুযোগে স্থানীয় এক নাবালিকার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। সেই সুত্রে নাবালিকার সঙ্গে দৈহিক মেলামেশা মোবাইলে ভিডিও ধারণ করে একাধিকবার ধর্ষন করে। গত ৫ জুলাই বিপ্লব উক্ত নাবালিকাকে অপহরণ করে মাগুরা শহরে নিয়ে আসে। মাগুরা বাসষ্ট্যান্ডে আসার পর স্থানীয় জনতার সন্দেহ হলে বিপ্লব বিষয়টি আঁচ করতে পেরে ওই কিশোরীকে রেখে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় ভিকটিমের নানি রাজবাড়ি জেলার বানিয়াকান্দি থানায় একটি মামলা করেন। মামলা রেকর্ডের পর ঝিনাইদহ র্যাব ছায়া তদন্ত শুরু করে এবং বিপ্লবের গতিবিধি পর্য়ালোচনা করে শনিবার তাকে সদর উপজেলার ডাকবাংলা এলাকা থেকে আটক করে। বিপ্লব প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবা ঞটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা র্যাবের কাছে স্বীকার করেছে।